কলকাতা: জঙ্গলমহলে গিয়ে আদিবাসী পরিবারের সঙ্গে দুপুরের খাবার খেয়েছেন। শুক্রবার বাগুইআটি-তে মধ্যাহ্নভোজ সারবেন মতুয়া পরিবারের সঙ্গে। বাগুইআটির আদর্শপল্লিতে নবীন বিশ্বাসের বাড়িতে অমিত-আগমনের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে।


সূত্রের খবর, মধ্যাহ্নভোজের শাহি মেনুতে থাকছে --- রুটি, ছোলার ডাল, পনিরের তরকারি, ভাত, শুক্তো, বেগুন ভাজা, মুগ ডাল, চাটনি, নলেন গুড়ের পায়েস।


বঙ্গ বহু ভোটে ভোটে নির্ণায়ক ভূমিকা নেন মতুয়ারা। রাজ্যে মতুয়া ধর্মাবলম্বী ৩ কোটিরও বেশি। নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কোচবিহার, মালদার কিছু অংশ মিলিয়ে রাজ্যে অন্তত ৭৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে মতুয়া ভোটাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।


উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি সংরক্ষিত বিধানসভা আসনে কার্যত নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা নেয় মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক। গত লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে, বনগাঁ এবং রানাঘাট - মতুয়া অধ্যুষিত ২টি লোকসভা কেন্দ্রই তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি।


২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া মন জয়ে বিজেপির অস্ত্র ছিল নাগরিকত্ব ইস্যু। কিন্তু ‘হাত খুলে বিজেপিকে ভোট’ দেওয়ার ১০ মাস পরও নাগরিকত্ব আইন কার্যকরী না হওয়ায় অসন্তুষ্ট মতুয়াদের একটা বড় অংশ।


এই ইস্যুতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছি, ডিসেম্বরের মধ্যে এটা চালু হবে, আমরা আশাবাদী, মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি আমরা, চাপ আছে আমাদের ওপর।


বিজেপি যখন মতুয়াদের মন ধরে রাখতে ব্যস্ত, তখন একুশে-র বিধানসভা ভোটের আগে সেই ভোটকেই কাছে টেনে আনতে তৎপর তৃণমূল। বুধবারই উদ্বাস্তুদের জমির পাট্টা, মতুয়াদের জন্য পৃথক উন্নয়ন বোর্ড গড়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।


মতুয়াদের নিয়ে তৃণমূল আর বিজেপির দড়ি টানাটানিকে কটাক্ষ করেছে বাম-কংগ্রেস।


মতুয়াদের নিয়ে উদ্বাস্তু আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল প্রমথরঞ্জন ঠাকুরের হাত ধরে। ১৯৬২ সালে বিধানচন্দ্র রায়ের মন্ত্রিসভায় আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন তিনি। ১৯৬৭-তে নবদ্বীপ থেকে সাংসদও নির্বাচিত হন তিনি। এরপর যমুনা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। মতুয়াদের নাগরিকত্ব ইস্যু আজও জ্বলন্ত। আর তার আঁচে ফুটছে বঙ্গ রাজনীতিও।