গুয়াহাটি: ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবের সঙ্গে সঙ্গে সময়ের আগে বর্ষা ঢোকার জেরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে অসমেও(Assam floods) ৷ গত রবিবার থেকে টানা হয়ে যাওয়া প্রবল বৃষ্টিতে অসমের বিভিন্ন নদী হু হু করে বেড়েছে জলস্তর ৷ যার জেরে নিম্ন অসমের বেশিরভাগ জেলা জলমগ্ন ৷ এর জেরে এখনও পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে আর বিপদে পড়েছেন প্রায় দু লক্ষ মানুষ।
অসমের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে খবর, রবিবার থেকে প্রবল বৃষ্টির জেরে নটি জেলা বন্যার কবলে পড়েছে ৷ বন্যা কবলিত জেলায় ভোগান্তির শিকার হয়েছেন প্রায় দু লক্ষ মানুষ ৷ যার মধ্যে বরাক উপত্যকার হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ জেলা বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷
ব্রহ্মপুত্র নদ সহ রাজ্যের বেশিরভাগ নদীর জলস্তর বাড়ায় নগাঁও,হাইলাকান্দি, পশ্চিম কার্বি আংলং, করিমগঞ্জ, কাছাড়, হোজাই, গোলাঘাট,ডিমা-হাসাও এবং কার্বি আংলং জেলাগুলির বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যাদুর্গত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মোট এক লক্ষ ৯৮ হাজার ৮৫৬ জন। এখনও পর্যন্ত রাজ্যের মোট নটি জেলার ৩৮৬টি গ্রাম বন্যায় জলমগ্ন। এর মধ্যে কাছাড়ের ১৫০টি ও করিমগঞ্জের ১০০টি গ্রাম রয়েছে। করিমগঞ্জ জেলায় বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৯৫৯ জন৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ২৩৯ হেক্টর চাষের ক্ষেত। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বন্যাদুর্গতদের জন্য মোট ১১০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে ৷ তাতে এখনও পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন ৩৫৬৪০ জন ৷
বিভিন্ন জলমগ্ন এলাকা থেকে বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে৷ রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দমকল ও জরুরি পরিষেবা, সিভিল ডিফেন্সের সদস্যদের পাশাপাশি ওই কাজে হাত লাগিয়েছে রাজ্য প্রশাসনও। বন্যাদুর্গতদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ত্রাণ হিসেবে ৫৮২ কুইন্টাল চাল, ৪৯৯ কুইন্টাল ডাল, ২৭ কুইন্টাল নুন ও ২ হাজার ১৪০ লিটার সরষের তেল বিলি করা হয়েছে ৷
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গেছে, অতিরিক্ত বৃষ্টির জেরে ইতিমধ্যেই ব্রহ্মপুত্র নদ ও কপিলি নদীর জলস্তর বিপদসীমা অতিক্রম করে গেছে ৷ অসমের পাশাপাশি উত্তর-পূর্বের জেলাগুলিতে আগামী পাঁচদিন অনবরত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর ৷ যার জেরে আরও আতঙ্কিত মানুষ ৷
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।