Iran-Israel War: ‘ইজরায়েলের পিঠ বাঁচাতে এসেছিল, থাপ্পড় কষিয়েছি আমেরিকাকে’, যুদ্ধেজয়ের ঘোষণা করলেন আয়াতোল্লা আলি খামেনেই
Ayatollah Ali Khamenei: কোথায় আছেন আয়াতোল্লা আলি খামেনেই?

নয়াদিল্লি: যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হয় গিয়েছে। কিন্তু তাঁর হালহকিকত নিয়ে ধোঁয়াশা। ইরানের সর্বোচ্চ শাসক আয়াতোল্লা আলি খামেনেই (Ayatollah Ali Khamenei) কোথায়, বলতে পারছেন না কেউই। আর সেই আবহেই, গোপন ডেরা থেকে দুনিয়াকে বার্তা দিলেন তিনি। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ের ঘোষণা করলেন যেমন, তেমনই আগ্রাসন নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন আমেরিকাকে। (Iran-Israel War)
১২ দিন ব্যাপী যুদ্ধের পর ভারতীয় সময়, মঙ্গলবার ভোরে ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার পরও জনসমক্ষে দেখা যায়নি খামেনেইকে। শেষ পর্যন্ত, বৃহস্পতিবার ভিডিও বার্তায় সকলকে সম্বোধন করলেন তিনি। (Ayatollah Ali Khamenei)
বক্তৃতার শুরুতেই এদিন ইজরায়েলের ‘ইহুদি জাতীয়তাবাদী’ শক্তির বিরুদ্ধে জয় ঘোষণা করেন খামেইনি। তিনি বলেন, “ভুয়ো জাতীয়তাবাদী ইহুদি শক্তিকে পরাজিত করার জন্য মহান ইরান দেশকে অভিনন্দন। এত দাবি, হুঙ্কার, দাবিদাওয়াই সার। ইসলামিক রিপাবলিকের প্রত্যাঘাতে প্রায় গুঁড়িয়ে যেতে বসেছিল ওরা।”
ইরান বনাম ইজরায়েল সংঘাত থেকে গোড়ায় দূরত্ব বজায় রাখলেও, শেষ পর্যন্ত ইজরায়েলের ত্রাতা হয়েই ফের এগিয়ে আসে আমেরিকা। সংঘাতে নিজেকে জড়িয়ে নেয় তারা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র গবেষণা কেন্দ্রে আঘাত হানে আমেরিকার বাহিনী। পাল্টা জবাবে কাতারে আমেরিকার সেনাঘাঁটিতে আঘাত হানে ইরান। আর তার ঠিক পরই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেন ট্রাম্প।
এদিন খামেনেইয়ের বক্তৃতায় আমেরিকার কথা উঠে এসেছে। তাঁর মতে, এই যুদ্ধে আমেরিকা নিজে নিজেকে জড়িয়ে নেয়। ইজরায়ের পিঠ বাঁচাতে করতে, তাদের ধ্বংস হওয়া থেকে বাঁচাতেই এই সংঘাতে নিজেকে জড়ায় আমেরিকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যে কাঙ্খিত ফল পেতে ব্যর্থ হয় তারা। খামেনেই বলেন, “আমেরিকার শাসককে পরাস্ত করার জন্যই দ্বিতীয় অভিনন্দন প্রাপ্য আমার প্রিয় ইরানের। এউ যুদ্ধে না ঢুকলে ইহুদি জাতীয়তাবাদী শক্তি গুঁড়িয়ে যাবে বুঝতে পেরেছিল আমেরিকা। এই যুদ্ধ থেকে কিছুই পায়নি ওরা। এখানেও ইসলামিক প্রজাতন্ত্র বিজয়ী হয়েছে, আমেরিকার গালে কষিয়ে থাপ্পড় মেরেছে।”
খামেনেই আরও বলেন, "আমেরিকাকে জোর ধাক্কা দিয়েছে ইসলামিক রিপাবলিক। এই অঞ্চলে আমেরিকার মূল ঘাঁটি, আল-উদেইদে আঘাত হানা হয়েছে, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ওদের।"
আমেরিকা জানিয়েছে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি একেবারে শেষ করে দিয়েছে তারা। আবার শুরু করতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে তেহরানের। প্রথমে বিশেষ ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করলেও, ইরানও ক্ষয়ক্ষতির কথা মেনেছে। তবে পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর ইরান। দেশে নয়া আইন চালু করেছে তারা, যার আওতায় আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সঙ্গে আর সহযোগিতা করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
কিন্তু এতকিছুর মধ্যেও খামেনেইয়ের অবস্থান জানা যায়নি। প্রথমে শোনা যায়, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন। অবস্থান যাতে বুঝতে না পারে কেউ, তাই ফোন, ইন্টারনেট কিছু ব্যবহার করছেন না। অত্যন্ত বিশ্বস্ত কয়েক জনই তাঁর ঠিকানা জানেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। পর পর ইরানের বেশ কয়েক জন শীর্ষ আধিকারিক, বিজ্ঞানী খুন হয়েছেন, যার নেপথ্যে ইজরায়েল সংযোগ উঠে আসে। খামেনেইয়ের প্রাণনাশের আশঙ্কাও রয়েছে। তাই গোপন আশ্রয়েই রয়েছেন তিনি। কিন্তু একদিকে বহির্শত্রুর আক্রমণ, অন্য দিতে, দেশের অন্দরে সরকার বিরোধী শক্তির মাথাচাড়া দেওয়া, এমন সময় খামেনেইয়ের অনুপস্থিতি দেশের রাজনৈতিক স্থিতাবস্থাকে নাড়িয়ে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।























