নয়া দিল্লি: দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা, তবে এখনও প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছে বাংলাদেশ। একদিনে বাংলাদেশে নিহত প্রায় ১৫০। সকালেও ঢাকায় বেশ কিছু সরকারি ভবন ও মন্ত্রীদের বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ জনতার। এই প্রেক্ষাপটে এদিন রাজ্যসভায় পড়শি দেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। 


এদিন রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক সব সময়ই ভীষণ কাছের। বহু বছর ধরে, সব সরকারের সঙ্গেই। কিন্তু বাংলাদেশে যে ঘটনা ঘটেছে তা রাজনীতির ঊর্ধ্বে। ২০২৪ এ জানুয়ারিতেই নির্বাচন হয় সেখানে। কিন্তু এরপর থেকে নানা সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। সর্বশেষ ছাত্র আন্দোলন সেখানকার পরিস্থিতিতে আরও জটিল করে তোলে। হিংসাত্মক হয়ে ওঠে সব জায়গা, সরকারি অফিস-বাড়ি ভাঙচুর চলে। ট্রাফিক এবং রেলও অবরোধ চলে। জুন থেকে এই সমস্যার সূত্রপাত ঘটে। আমরা সেই সময় থেকেই যোগাযোগ রেখে চলেছি। চেষ্টা করেছি পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে।'


জয়শঙ্কর বলেন, 'এরপরই দাবি ওঠে শেখ হাসিনার পদত্যাগের। ৪ অগাস্ট চরমে ওঠে পরিস্থিতি। পুলিশের উপর হামলা হয়। ২১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের কোটা নিয়ে রায়ের পরেও বাংলাদেশ শান্ত হয়নি। আন্দোলনের একটাই দাবি হয়ে ওঠে, হাসিনার পদত্যাগ। গতকাল প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফার পর দেশ ছেড়েছেন। প্রাণহানির আশঙ্কাপ্রকাশ করে ভারতে আসতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা। আমরা বাংলাদেশে থাকা ভারতীয়দের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রেখে চলেছি। বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষা করছি'। 


আরও পড়ুন, প্রাণহানির আশঙ্কা আগেই করেছিলেন শেখ হাসিনা: সূত্র


এরপরই উদ্বেগের সুর শোনা যায় এস জয়শঙ্করের গলায়। বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'এর মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ হয়েছে, মন্দির এবং তাদের ব্যবসা, হামলা চালানো হয়। একাধিক জায়গায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে খবর।' বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'এখনও বাংলাদেশে প্রায় ১৯ হাজার ভারতীয়রা রয়েছে। এর মধ্যে ৯ হাজার পড়ুয়া আছে। তবে অধিকাংশকেই ভারতে ফিরিয়ে আনা সক্ষম হয়েছে। আমরা আশা করব বাংলাদেশ আমাদের সহায়তা করবে।' 



এদিকে সূত্র মারফৎ খবর, প্রাণহানির আশঙ্কা আগেই করেছিলেন শেখ হাসিনা। ৩১ জুলাই ঢাকায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করে বিরোধীদের ষড়যন্ত্রের কথা জানান হাসিনা। ভারতের কাছে সাহায্যের আবেদনও করেন মুজিব-কন্যা। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে ভারতে আসতে পারেন। হাসিনাকে পরামর্শ দিয়েছিল বিদেশমন্ত্রক। প্রতিবেশী দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি ভারত। তাই এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, খবর সূত্রের। 


 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে