ঢাকা: রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর সংরক্ষণ নীতিতে সংশোধন ঘটছে বাংলাদেশে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে শেখ হাসিনার সরকার। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ মতো ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পরিবারের জন্য চাকরিতে ৭ শতাংশ সংরক্ষণের উল্লেখ রয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। পাশাপাশি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য ১ শতাংশ এবং শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্য আরও ১ শতাংশ সংরক্ষণের উল্লেখ রয়েছে। বাকি ৯৩ শতাংশ নিয়োগই হবে মেধার ভিত্তিতে। (Bangladesh Quota Reform)


মঙ্গলবার হাসিনা সরকার যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাতে বলা হয়, এখন থেকে সরকারি চাকরিতে দেশে মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে। সংরক্ষণের আওতায় বাকি ৭ শতাংশ নিয়োগ হবে। সংরক্ষণের আওতায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে, মেধাতালিকা থেকে প্রার্থী বাছাই করে শূন্যপদ পূরণ করা হবে এবার থেকে। (Bangladesh Anti Quota Movement)


বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, সরকারি, আধা সরকারি, রাষ্ট্রায়াত্ত, আধা রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থা, স্বতন্ত্র, আধা স্বতন্ত্র এবং এলাকাভিত্তিক সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে সরাসরি মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে। স্বাধীনতা সংগ্রামী, শহিদ এবং বীরাঙ্গনাদের পরিবারের সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ চাকরি সংরক্ষিত রাখা হবে। মঙ্গলবার সরকারের তরফে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন দেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রশাসন বিভাগের মন্ত্রী ফারহাদ হোসেন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মহম্মদ আলি আরাফতও সাংবাদিক বৈঠকে অংশ নেন।


আরও পড়ুন: Bangladesh Anti Quota Protests: বিদেশেও হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন-বিক্ষোভ, আমিরশাহিতে জেল হল ৫৭ বাংলাদেশি নাগরিকের


রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর সংরক্ষণ নীতিতে এই সংশোধনকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু আন্দোলন চলাকালীন পুলিশ ও প্রশাসন যে সহিংস আচরণ করেছে, তার বিহিত চাইছেন আন্দোলনকারীরা। সেই নিয়ে আনিসুল জানান, সংরক্ষণ ব্যবস্থায় যে সংস্কার চাওয়া হয়েছিল, তা করা হয়েছে। হিংসার ঘটনায় বিচার বিভাগী তদন্ত কমিশনও গঠন করা হয়েছে, তারা অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। আহতের চিকিৎসার খরচ সরকার বহন করবে। 


দেশে ফের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে বলে মন্তব্য করেন অনিসুল। সাধারণ পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়ে থাকলে, সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে এবং পড়ুয়াদের নিরাপত্তার দিকে সরকার নজর দেবে বলেও জানান তিনি। পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার রাত থেকে আবারও ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হয়েছে বাংলাদেশে। বুধ এবং বৃহস্পতিবার চার ঘণ্টার জন্য সব অফিস খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্য়াঙ্কে আপাতত শুধু টাকা জমা এবং টাকা তোলা যাবে। এত সহজে অস্থিরতা কাটবে বলে যদিও মনে করছেন না অনেকেই। কারণ সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী সংরক্ষণ বিরোধী রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে ১৯৭ জন মারা গিয়েছেন। প্রায় ২ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। তাই ক্ষত এত দ্রুত সারবে বলে মনে করছে না বিশেষজ্ঞ মহল।