কলকাতা : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শেখ হাসিনা। পতন হয়েছে ১৫ বছরের আওয়ামী লিগ সরকারের। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান। বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে এসেছেন হাসিনা। অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের দখলে চলে গেছে সেদেশের সংসদভবন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন। ভাঙা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মূর্তিও। অতি দ্রুত বাংলাদেশের এই পটপরিবর্তনই এখন আলোচ্য বিষয়। কী করে এই পরিণতি হল বাংলাদেশের ? এর পিছনে কি কোনও বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে ? আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র শোনার কথা জানাচ্ছেন শিক্ষাবিদ ডক্টর পবিত্র সরকার। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে এই আন্দোলনের সূত্রপাত যখন হয় তখন ঘটনাচক্রে ঢাকায় ছিলেন শিক্ষাবিদ। কার্যত প্রায় দুই দিন তাঁকে গৃহবন্দী হয়ে থাকতে হয়েছিল সেই সময়।
কোনও ইঙ্গিত কি পাওয়া গিয়েছিল যে, এরকম নাটকীয়ভাবে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে হাসিনাকে ? 'ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন'-এর অনুষ্ঠানে এই প্রশ্নের জবাবে পরিত্র সরকার বলেন, "১৮ তারিখে আমি গেলাম। তার আগের দিনই গুলি চলে জাহাঙ্গির নগরে। যার জেরে ছয় ছাত্রের মৃত্যু হয়। কিন্তু, আন্দোলনটা যে এত তীব্র আকার নেবে তা বুঝতে পারিনি। আমি যেদিন ফিরে আসি সেদিনও না। ২২ তারিখে ফিরলাম। কিন্তু, ২১ তারিখে তো তা নিয়ে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট । বলল যে, মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ নেওয়া হবে। বাকি সামান্য রইল। ফলে, তখন ভেবেছিলাম আস্তে আস্তে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসবে। তবে এটা বুঝতে পেরেছিলাম যে, ছাত্রদের হাত থেকে আন্দোলনটা ছিনতাই হয়ে গেছে। অন্য কেউ নিয়ে নিয়েছে আন্দোলনটা। রাস্তাঘাটে সেরকম লক্ষণ দেখলাম। তার ফলে আন্দোলনটা হাসিনা-বিরোধী এবং সঙ্গে সঙ্গে ভারত-বিরোধীও। যখন ফিরি তখন গুজব রটছিল, রাস্তাঘাটে পুলিশ যাদের দেখা যাচ্ছে তারা হচ্ছে ছদ্মবেশী ভারতীয় সৈন্য। তখনই গুজব রটেছিল যে, হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তৃতীয় গুজব ছিল যে, খালেদা জিয়া আর নেই। তিনি অসুস্থ ছিলেন। "
তিনি আরও বলেন, "একসময় বাংলাদেশেই শুনেছিলাম যে, মুক্তিযুদ্ধের পর শেখ মুজিব ভারতকে অনেক জমি দিয়ে দিয়েছেন। যদিও যখন ফিরি তখন মনে হয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর আস্তে আস্তে থেমে যাবে। কিন্তু আন্দোলন ততদিনে অন্যদের হাতে চলে গেছে। হাসিনা-বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। কানাঘুষো শুনেছিলাম, এই আন্দোলনটার পিছনে কোনও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে। যেটা হাসিনা সরকারের ইন্টেলিজেন্স ধরতে পারেনি। বাংলাদেশে চিনের প্রভাব বাড়ছিল।"