প্যারিস: ফ্রান্স সহ গোটা পৃথিবীতে নিন্দার ঝড় উঠেছে প্যারিসের রাস্তায় সম্প্রতি ইতিহাসের শিক্ষককে প্রকাশ্য রাস্তায় দিনের আলোয় সবার চোখের সামনে গলা কেটে খুনের ঘটনায়। ৪৭ বছর বয়সি শিক্ষক স্যামুয়েল পেটিকে গত শুক্রবার প্যারিস শহরতলির মধ্যবিত্ত পাড়ায় তাঁর স্কুলের বাইরে গলা কেটে হত্যা করে চেচেন বংশোদ্ভূত ১৮ বছরের একটি ছেলে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, অধিকার বিষয়ের ওপর ক্লাসে স্যামুয়েল পয়গম্বর মহম্মদের ব্যঙ্গচিত্রের উল্লেখ করে তার ব্যবহার করেছিলেন। এটাই ছিল ঘাতকের চোখে তাঁর অপরাধ। স্যামুয়েলের আচরণকে ধর্মদ্রোহিতা তকমা দেগে নিষ্ঠুর ভাবে তাঁর প্রাণ কাড়তে হাত কাঁপেনি ছেলেটির। সে ধর্মদ্রোহিতার বদলা নিয়েছে। পুলিশ তাকে পাল্টা গুলি করে মেরে ফেলে। ঘটনাটি তীব্র আলোড়ন ফেলেছে মুক্ত চিন্তার দেশ বলে পরিচিত ফ্রান্সে। ৫ বছর আগে ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন পত্রিকা শার্লি হেবদোর দপ্তরে ভয়াবহ সংগঠিত সন্ত্রাসবাদী হামলার দগদহে স্মৃতি উসকে দিয়েছে শিক্ষককে গলা কেটে হত্যা। মহম্মদের ব্যঙ্গচিত্র ছাপার জন্যই বদলা নিতে ম্যাগাজিনের দপ্তরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছিল সশস্ত্র জঙ্গিরা। প্যারিসের ঘটনা দেখিয়ে দিল, সেই জঙ্গিদের চিন্তাধারার উত্তরাধিকারীরা আজও ফ্রান্সে পুরোদমে সক্রিয়।
ফ্রান্সের জনজীবনে নামডাকওয়ালা বিদ্বজনেরা শিক্ষক হত্যাকে ফরাসি মূল্যবোধ ও প্রজাতন্ত্রের ওপর আক্রমণ বলে নিন্দা করেছেন। বুধবার প্যারিসের সরবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত শিক্ষকের স্মৃতিতে জাতীয় স্মরণসভা হওয়ার কথা। পাশাপাশি তাঁকে মরণোত্তর সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘লেজিঁও দ'নার’ খেতাব দেওয়া হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী জ্যঁ মিশেল ব্ল্যাঙ্কার।