ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, উত্তর দমদম : পুরভোটের সকালে রক্তাক্ত সাংবাদিক। উত্তর দমদম পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্ত এবিপি আনন্দের সাংবাদিক সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও চিত্র সাংবাদিক শ্যামল জানা। মেরে মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে সুকান্ত মুখোপাধ্যায়ের। বেধড়ক মারধর করা হয়েছে চিত্র সাংবাদিক শ্যামল জানাকেও।
দুষ্কৃতীদের চড়াও হওয়ার ছবি ধরা পড়ে ক্যামেরায়। উদয়পুরের আলিপুর খেলার মাঠ এলাকায় সিপিএম প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ পেয়ে খবর সংগ্রহ করতে যান সুকান্ত। অভিযোগ, সেখানে বহিরাগতরা জড়ো হয়েছিল। ভোটারদের বাধা দেওয়া হচ্ছিল বলেও অভিযোগ করে সিপিএম। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী শিবশঙ্কর ঘোষ, ভোটারদের নিয়ে বুথের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁদের সঙ্গেই যাচ্ছিলেন আমাদের প্রতিনিধি সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও চিত্র সাংবাদিক শ্যামল জানা।
দেখা যায়, গলির উল্টোদিক থেকে ২০-২৫ জন যুবক আসছে। সেই ছবি ধরাও পড়ে আমাদের ক্যামেরায়। সিপিএম প্রার্থী অভিযোগ করেন, এঁরা সকলেই বহিরাগত এবং এঁরাই ভোট দিতে বাধা দিয়েছেন। অভিযুক্তদের পরিচয় জানতে গেলে, সুকান্তর উপর চড়াও হয় এই দুষ্কৃতীরা। ক্যামেরাও ভাঙচুর করা হয়। বেধড়ক মারধর করা হয়, আমাদের সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিককে।
ধারালো কোনও জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয় সুকান্তকে। ক্যামেরা ভেঙে ফেলে দেওয়া হয় ড্রেনে। জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয় বুম। সেই সময় ঘটনাস্থলে কোনও পুলিশ কর্মী উপস্থিত ছিলেন না। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। দুষ্কৃতীদের কাউকেই এখনও ধরা হয়নি। গুরুতর জখম অবস্থায় সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও শ্যামল জানাকে বেলঘরিয়ার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রবিবার রাজ্যের ২০টি জেলার ১০৮টি পুরসভায় ভোট। সকাল ৭টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। যদিও অশান্তির আঁচ ছড়িয়েছে আগে থাকেই। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ। মোট ওয়ার্ড ২ হাজার ২৭১টি। প্রতিটি বুথে সশস্ত্র পুলিশ ছাড়াও আছেন পুলিশ আধিকারিক। সুষ্ঠুভাবে ভোট করাতে একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
পুরভোটে ১৪ জন ডিআইজি, ৩ জন এডিজি বা আইজি পদমর্যাদার অফিসার আছেন ২০টি জেলায় ভোটের দায়িত্বে। মোতায়েন ৪৪ হাজার পুলিশ কর্মী। এর সঙ্গে আছেন ১০ জন আইএএস, যাঁদের সিনিয়র স্পেশাল অবজার্ভার করা হয়েছে। অবজার্ভার, স্পেশাল অবজার্ভার, সিনিয়র স্পেশাল অবজার্ভার মিলিয়ে মোট ১৩৫ জন পর্যবেক্ষক থাকবেন। পুরভোটের ফল ঘোষণা ২ মার্চ।