কলকাতা: সংসদে দাঁড়িয়ে জ্বালাময়ী ভাষণের জন্য়ই পরিচিত তিনি। আবারও খবরের শিরোনামে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra), তবে কারণ সম্পূর্ণ ভিন্ন। মহুয়া ঘুষ নিয়েছেন বলে বিস্ফোরক দাবি তুললেন ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার বিজেপি (BJP) সাংসদ নিশিকান্ত দুবে (Nishikant Dubey)। তাঁর দাবি, ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে টাকা এবং উপহারের বিনিময়ে মহুয়া লোকসভায় প্রশ্ন করেছেন। (Mahua Moitra News)


শুধুমাত্র অভিযোগ তুলেই থামেননি নিশিকান্ত। সরাসরি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, আদানি গোষ্ঠীকে বদনাম করতে হীরানন্দানি গ্রুপ থেকে টাকা নিয়েছিলেন মহুয়া। তার পরই আদানিদের নিয়ে লোকসভায় প্রশ্ন তোলেন তিনি।  মহুয়ার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন নিশিকান্ত। মহুয়াj বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে, সিবিআই প্রধানকে চিঠি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অনন্ত দেহাদরাইও।



সোশ্যাল মিডিয়ায় এর জবাব দিয়েছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া। তিনি লেখেন, 'বিজেপি-র ভুয়ো ডিগ্রিধারীদের বিরুদ্ধে একাধিক বিধিভঙ্গের অভিযোগ পড়ে রয়েছে। তার পর আমার বিরুদ্ধেও বিধিভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে এগোতে পারেন স্পিকার। আমার দরজায় আসুক ইডি, তবে তার আগে আদানি এবং বাকিদের বিরুদ্ধে কয়লা দুর্নীতি নিয়ে পদক্ষেপ করুক'।  


আরও পড়ুন: Adani Group: ‘কয়লার দাম বাড়িয়ে ৬০০০ কোটি পকেটে, বিদ্যুৎবাবদ মাশুল গুনেছেন মানুষ’, ফের কাঠগড়ায় আদানিরা


একই সঙ্গে সিবিআই-কেও স্বাগত জানিয়েছেন মহুয়া। লেখেন, 'সিবিআই-কেও স্বাগত জানাচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখুক। তার আগে আদানির বিরুদ্ধে ওঠা হাওয়ালা, বেনামি টাকার তদন্ত করুক সিবিআই। বিমাবন্দর কিনতে বা প্রতিযোগীদের মাত দিতে, আদানি বিজেপি-র সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করতেই পারেন। আমার সঙ্গেও করে দেখান'।



মহুয়ার বিরুদ্ধে এই অভিযোগের নেপথ্যে নিশিকান্তের সঙ্গে তাঁর পুরনো সংঘাতের সংযোগ রয়েছে বলেও মনে করছেন বিরোধীদের একাংশ। কারণ এবছরই মার্চ মাসে নিশিকান্তের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে এর আগে প্রশ্ন তুলেছিলেন মহুয়া। মহুয়া দাবি করেন, ২০০৯ সালে জমা দেওয়া নির্বাচনী হলফনামায় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে MBA করেছেন বলে দাবি করেছিলেন নিশিকান্ত। কিন্তু ওই বছর তাঁর নামে কোনও ছাত্র ছিলেন না। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ও তাতে সিলমোহর দিয়েছে বলে জানান মহুয়া। শুধু তাই নয়, প্রতাপ ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি-র জন্য আবেদনেও কোথাও MBA-র উল্লেখ করেননি নিশিকান্ত, এমন দাবিও তোলেন। সেই সংক্রান্ত নথিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন মহুয়া। স্পিকারকে নিশিকান্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে আর্জি জানান।



এবার মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন নিশিকান্ত। তবে তাতেও থেমে থাকেননি মহুয়া। আবারও নিশিকান্তকে 'ভুয়ো ডিগ্রি'র খোঁচা দিয়েছেন তিনি। 'ঘুষবাবদ পাওয়া টাকা এবং উপহারের বিনিময়ে আমি একটি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় কিনব ভাবছি, যেখান থেকে আসল ডিগ্রি কিনতে পাবেন দুবে। স্পিকারকে অনুরোধ, ভুয়ো হলফনামা দেওয়ার জন্য ওঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করুন এবং তার পর আমার বিরুদ্ধে তদন্তকমিটি গড়ুন'।