লন্ডন: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি ভ্যাকসিন মানবশরীরে প্রথম দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বা ট্রায়ালের ফল বেরিয়েছে। এই ফলাফলে আশার আলোই দেখা গিয়েছে।  এই রিপোর্টের দিকে অধীর প্রতীক্ষায় তাকিয়ে ছিল গোটা বিশ্ব। প্রথম দফার ট্রায়াল অনুযায়ী ভ্যাকসিন নিরাপদ। ভ্যাকসিনের প্রতিরোধ ক্ষমতা আশাব্যঞ্জক। ‘দ্য ল্যানসেট’ জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনই উল্লেখ করা হয়েছে। এরইমধ্যে চলতি বছরের শেষে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় একটি কার্যকর ভ্যাকসিন হাতে আসার জল্পনায় জল ঢাললেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী  বরিস জনসন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নিজেই কয়েক মাস আগে করোনাভাইরাস সংক্রমণে মারাত্মক কাবু হয়ে পড়েছিলেন, হাসপাতালে কয়েকদিনের চিকিত্সায় সুস্থ হয়ে ওঠেন। আজ কেন্ট সফরকালে এই নিয়ে আশা, প্রত্যাশা, জল্পনার মধ্যে কিছুটা নিরাশার সুর শোনা যায় তাঁর বক্তব্যে। তিনি বলেন, মন তো চায়, যাতে ১০০ শতাংশ আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলতে পারি যে, এ বছরেই কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন মিলবে। আপনারা জানেন, এ ব্যাপারে এখন ১০০ টা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। ব্রিটেনে এ ব্যাপারে বিশ্বের শীর্ষস্তরের কয়েকজন বিজ্ঞানী জড়িত আছেন। অক্সফোর্ড প্রোগ্রাম চলছে যেখানে আমরা ইতিমধ্যেই ১০০ মিলিয়ন ডোজ নিশ্চিত করেছি। আরও বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিনেও বিনিয়োগ হচ্ছে। একটি ফরাসি, একটি জার্মান—৯০ মিলিয়ন ডোজে ইতিমধ্যেই বিনিয়োগ করছি আমরা। আমি অবশ্য়ই আশাবাদী। আমি প্রতীক্ষার দিন গুনছি। কিন্তু চলতি বা সামনের বছরেই ভ্যাকসিন মিলবে বলে আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত, এটা বাড়িয়ে বলা হবে। আমরা সেই জায়গায় এখনও নেই। বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলুন, তাঁরা ভাবছেন, বিপুল আন্তর্জাতিক প্রয়াসের ফলে কিছু মিলবেই। তাঁরা বেশ আত্মবিশ্বাসী যে, কোনও না কোনও চিকিত্সা, ভ্যাকসিন বেরবে যা সত্যিই ছবিটা বদলে দেবে। কিন্তু এই মুহূর্তে কি বলতে পারি, আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত? না। সেজন্যই আমাদের সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা, হাত ধোয়া, দোকানে বা সরকারি যানবাহনের মতো বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরা—এসব রীতি-নিয়ম মেনেই চলতে হবে। আমাদের সঙ্ঘবদ্ধ প্রয়াসেই ভাইরাসটাকে দমিয়ে রাখব। হয়তো অশ্বারোহী বাহিনীর পাহাড়় ডিঙিয়ে আসার মতো আসবে ভ্য়াকসিন। কিন্তু এখন বসে বসে তার দিন গুনে গেলে চলবে না।

ব্রিটেনের বিজনেস সেক্রেটারি অলোক শর্মা তিনটি আশার আলো দেখানো কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দ্রুত হাতে পাওয়ার জন্য় নতুন ডিল ঘোষণা করেছেন। ট্রায়াল সফল হলে ওই ভ্যাকসিনের ব্যাপক হারে উত্পাদনের জন্য কয়েক মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ করেছে জনসন সরকার।