নয়া দিল্লি : আজ তৃতীয় মোদি সরকারের দ্বিতীয় পূর্ণাঙ্গ বাজেট। মধ্যবিত্ত থেকে শিল্প-কী আশার আলো দেখাতে পারবেন নির্মলা সীতারমণ? তাকিয়ে গোটা দেশ। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ছিল জনমোহিনী বাজেটের ইঙ্গিত। অন্যদিকে বিরোধীরাও আক্রমণের জন্য তৈরি। তিনটি ইস্যুতে এবার বাজেট সেশনে উঠতে পারে ঝড়। নির্মলার বাজেট যেমনই হোক না কেন, বিরোধীরা তিন অস্ত্রে শান দিয়ে তৈরি। শনিবার তৃতীয় মোদি সরকারের দ্বিতীয় বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তার আগে থেকেই অবশ্য় মোদি সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে শুরু করেছে বিরোধীরা।
তিনটি মূল ইস্যু হল মুদ্রাস্ফীতি, মহাকুম্ভে মহাবিপর্যয় এবং পূর্বের অধিবেশনে ডঃ বি আর অম্বেদকর সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্য। এই তিন ইস্যু নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সরব বে বিরোধি শিবির, সরগরম হবে সংসদ। সরকারকে কোণঠাসা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কংগ্রেস। ইন্ডিয়া ব্লক এই বিষয়ে এককাট্টা, জানিয়েছে হাতশিবির। এছাড়াও সংসদ উত্তাল হতে পারে কর্মসংস্থান ইস্যুতেও। পিটিআই সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই কংগ্রেস নেতারা স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে জড়ো হয়েছিল ১০ জনপথে। সনিয়া গাঁধীর বাসভবনে আলোচনায় বসেন । হাজির ছিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এবং কেসি ভেনুগোপাল , রাজ্যসভার সাংসদ প্রমোদ তিওয়ারি। শুধু কংগ্রেস না তিন ইস্যুতে এনডিএ-কে নাস্তানাবুদ করতে এককাট্টা ইন্ডিয়া ব্লকের সব শরিকই এমনটাই দাবি কংগ্রেসের। জানান কংগ্রেস নেতা প্রমোদ তিওয়ারি।
এবার অধিবেশনে বিরোধীদের সবথেকে বড় অস্ত্র মহাকুম্ভের দুর্ঘটনা। ইতিমধ্যেই বিরোধীরা এই ঘটনাতে যোগী সরকারের ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা বলে দাবি করেছে। দিল্লিতে মোদি সরকার। উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকার!কয়েকদিন আগেই দিল্লির ভোট প্রচারে সুব্য়বস্থা-সুপ্রশাসন-ডবল ইঞ্জিনের মর্ম বোঝাতে মহাকুম্ভের আয়োজনকেই তুলে ধরেছিলেন যোগী আদিত্য়নাথ। আর সেখানেই ঘটল ভয়ঙ্কর বিপর্যয়! এটাই সবথেকে বড় হাতিয়ার বিরোধীদের কাছে। বিরোধীরা বলছে, আয়োজনের ঢক্কানিনাদই সার, শুধুই ফাঁপা প্রচার! রাহুল গাঁধী সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন,অব্যবস্থা এবং সাধারণ ভক্তদের পরিবর্তে VIP-দের প্রতি প্রশাসনের বিশেষ নজর এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য দায়ী VIP সংস্কৃতি, যা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত এবং সাধারণ ভক্তদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সরকারকে আরও ভাল ব্যবস্থা করা উচিত। এই বিষয়টিই এবার সংসদে ঝড় তুলতে পারে।
শুক্রবার উভয় কক্ষে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর ভাষণ দিয়ে বাজেট অধিবেশন শুরু হয় । তারপর রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে সনিয়া গাঁধীর মন্তব্য়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অধিবেশন শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে সনিয়া বলেন, ওঁকে খুব ক্লান্ত মনে হচ্ছিল। ভাল করে কথাও বলতে পারছিলেন না। বিকেলে রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে ঘটনার নিন্দা করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সাংসদ সনিয়া গান্ধীর মন্তব্য কুরুচিকর, দুর্ভাগ্যজনক এবং বর্জনীয়।' সব মিলিয়ে বাজেট অধিবেশনের শুরু থেকেই সংঘাতের পারদ সপ্তমে।
বাজেট অধিবেশন দুটি ভাগে অনুষ্ঠিত হবে যার প্রথম পর্ব ৩১ জানুয়ারি শুরু হয়েছে। চলবে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ২য় পর্বটি ১০ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। সরকার বাজেট অধিবেশনের জন্য মোট ১৬ টি বিল তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ওয়াকফ (সংশোধন) বিল, ব্যাঙ্কিং আইন (সংশোধন) বিল, রেলওয়ে (সংশোধন) বিল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) বিল, তেলক্ষেত্র (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) সংশোধনী বিল, দ্য প্রোটেকশন অফ ইন্টারেস্টস ইন এয়ারক্রাফ্ট অবজেক্টস বিল, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার্স বিল।