কলকাতা: শহরে ফের ডেঙ্গির বলি। নেতাজিনগর এলাকার পল্লীশ্রীতে মারা গেল দশ বছরের এক স্কুলছাত্র। ভাইফোঁটার দিন কান্নার রোল তার বাড়িতে। মৃত আবির্ভাব মজুমদার সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ক্লাস ফাইভের ছাত্র ছিল।

তার বাবা অভিজিৎ মজুমদারের দাবি, কয়েকদিন ধরেই ছেলের থেকে থেকে জ্বর আসছিল। স্থানীয় চিকিৎসক দেখেই বলেন, ডেঙ্গি। তারপর ভর্তি করা হয় মুকুন্দপুরে হাসপাতালে। তিনি জানান, সোমবার চিকিৎসক দেখে বলেন ডেঙ্গি। আমরিতে রেফার করা হয়। দেখে বলেন ডেঙ্গি। প্রথমে বলেছিল বেড ক্রাইসিস। রিপোর্ট দেখেই বলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাডমিট করতে।

শনিবার ভোরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় আবির্ভাবের। তবে তার বাবার দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গির উল্লেখই করতে চাইছিলেন না। তিনি বলেন, ডাক্তাররা লিখতে চাইছিলেন না। আইসিইউ-তে শুনেছি, বলাবলি করছে অজানা জ্বর লিখতে হবে। পরে অবশ্য ডেঙ্গি লেখে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চায়নি। তাদের দাবি, যা হয়েছে, ডেথ সার্টিফিকেটে তাই লেখা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী জানিয়েছেন, শনিবার মৃত আবির্ভাবের চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে আবির্ভাবের মৃত্যুর পর পাড়াপড়শীদের মধ্যেও বাড়ছে আতঙ্ক। যার অন্যতম কারণ এখানকার পরিবেশ। সেখানে জঙ্গল এলাকায় ভাঙা গাড়ি, ডাবের খোলা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। ঘরে ঘরে জ্বর। আতঙ্কিত এলাকাবাসী।
তাদের বক্তব্য, আমরা আতঙ্কিত। অনেকের হয়েছে। এখানে তৎপরতার সঙ্গে কাজ হয়নি। কাউন্সিলরকে বলা হয়েছে কাজ হচ্ছে না। রোগ প্রতিরোধে কিছু করা হয়নি।

জায়গাটি কলকাতা পুরসভার ৯৮ পুরসভার অন্তর্গত। এখানকার সিপিএম কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তীর অবশ্য দাবি, নিয়মিত এলাকা পরিষ্কার করা হয়। মশা নিরোধক ওষুধ স্প্রে করা হয়। পরিত্যক্ত গাড়িগুলি বহুবার সরাতে বলা হলেও সরানো হয়নি। কলোনি
কমিটির নির্বাচন হচ্ছে না। তাই কেউ দায়িত্ব নিয়ে এই কাজ করতে এগিয়ে আসছে না।

এদিকে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে দাবি, শনিবার অবধি রাজ্যে ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩। আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ হাজার ৮১৯ জন।
শুক্রবার থেকে শনিবারের মধ্যে অর্থাৎ একদিনে নতুন করে ৭৭৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত চিহ্নিত হয়েছেন। এর মধ্যে ৫২৫ জন ভর্তি সরকারি হাসপাতালে। ১৫০ জন ভর্তি বেসরকারি হাসপাতালে।