কলকাতা: বালিগঞ্জের বহুতলে আবেশ দাশগুপ্তর মৃত্যু নিয়ে রহস্য অব্যাহত। তিন ঘণ্টা ধরে দেহের ময়নাতদন্তের পরও চিকিৎসকদের ধন্দ পুরোপুরি কাটেনি। তাই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে একেবারে নিশ্চিত হতে রবিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দাদের সঙ্গে বালিগঞ্জের বহুতলে পৌঁছোন চার অটোপসি সার্জেন।
যেখানে আবেশের দেহ পড়েছিল, সেই জায়গাটি দীর্ঘক্ষণ ধরে পরীক্ষানিরীক্ষা করেন তাঁরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেহ কীভাবে পড়েছিল, সেখানে কতটা রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে, তা দেখে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র উঠে আসতে পারে। পুলিশ সূত্রে খবর, আপাতত আবেশের মৃত্যুর কারণ হিসেবে তিনটি সম্ভাবনার কথা উঠে আসছে।
প্রথমত, বগলে বোতল ধরে আসার সময় পড়ে দুর্ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, এমনটা ঘটেছে বলে দাবি করেছে আবেশের বন্ধুরা। কিন্তু, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন? এমনটা কি সম্ভব? ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ অজয়কুমার গুপ্ত জানান, ধমনী কাটার পর ৫ মিনিটের মধ্যে হাসপাতালে না নিয়ে গেলে বাঁচানো যায় না। এক তৃতীয়াংশ রক্ত বেরিয়ে গেলে বাঁচানো মুশকিল।
দ্বিতীয় সম্ভাবনা হিসেবে উঠে আসছে, কারোর সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে কাচের বোতলের ওপর পড়ে গিয়ে মৃত্যু। সেক্ষেত্রেও কি বোতল ভেঙে শরীরে ঢুকে যেতে পারে? ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেউ ধাক্কা মারলে কীভাবে পড়ছে সেটা জরুরি।
আবেশের পরিবার অবশ্য খুনের অভিযোগে অনড়। অর্থাৎ, কেউ বোতল দিয়ে আঘাত করায় সময় নিজেকে বাঁচাতে যায় আবেশ। তখনই তা ভেঙে ঢুকে যায়। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, আবেশের বাঁ হাতের তালুতে একটি ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। যা নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টায় হতে পারে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ বলেন, তালুতে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ডিফেন্স উন্ড হতে পারে। কেউ মারলে কী হতে পারে।
তবে এগুলি শুধুই সম্ভাবনা। শেষমেশ আবেশের সঙ্গে কী ঘটেছিল, সেই উত্তর মিলবে ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টেই। অন্যদিকে, এর মধ্যেই রবিবার রাতে ময়নাতদন্তের পর আবেশের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর বাড়িতে। ১৭ বছরের কিশোরের নিথর দেহের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর মা ও পরিবারের সদস্যরা।
এদিন রাতেই আবেশের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।