কলকাতা:  চিকিৎসকদের গাফিলতিতে চার মাসের এক ফুটফুটে শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ। যা নিয়ে বুধবার সকাল থেকে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতাল। সেই অ্যাপোলো হাসপাতাল, যাদের গাফিলতিতে ডানকুনির সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে।
এদিন শিশু মৃত্যুর খবর পেয়েই সরাসরি হাসপাতালে চড়াও হয় তার পরিবারের সদস্যরা। ধাক্কা মেরে ভেঙে ফেলা হয় কাচের দরজা। হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গেও হাতাহাতিতে জড়ান মৃত শিশুর বাড়ির লোকজন।
ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা অভিজিৎ ও শালু চক্রবর্তীর চার মাসের শিশুকন্যা কুহেলিকে অ্যাপোলোতে ভর্তি করা হয় কোলনোস্কপির জন্য। এই দম্পতির দাবি, কোলনোস্কপির সময় অ্যানেস্থেশিয়ার ওভারডোজের জেরেই তাঁদের একরত্তি সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ডাক্তারদের শাস্তির দাবি তুলেছেন মৃত শিশুর মা।
বুধবার সকালে এই খবর পাওয়া মাত্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে চার মাসের কুহেলির পরিজনেরা! প্রথমেই তাঁরা ফুলবাগান থানায় অ্যাপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সেখান থেকে তাঁরা চলে আসেন অ্যাপোলো হাসপাতালে। চিৎকার করতে করতে ঢুকে পড়েন অ্যাপোলোর ভিতর।


তাদের দাবি তখন একটাই। যে চিকিৎসকদের গাফিলতিতে চার মাসের শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ, তাকে সামনে আনতে হবে।
বিক্ষোভের মুখে হাসপাতালের কর্মীরা ভিতরে ঢোকার এই কাচের দরজা বন্ধ করে দেন। কিন্তু, মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যরা তখন ভিতরে ঢুকতে মরিয়া। তাঁরা কাচের দরজা ধরে ঝাঁকাতে শুরু করেন। ঝনঝন করে ভেঙে পড়ে কাচ।
হাসপাতালের কর্মীরা তাঁদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করলে, কুহেলির পরিজনদের সঙ্গে তাঁদের কার্যত হাতাহাতি বাধার উপক্রম হয়। এরইমধ্যে মৃত শিশুর বাবাকে দেখা যায় উত্তেজিত আত্মীয়দের শান্তি করতে।
হাসপাতালের কর্মীরা তখন আতঙ্কে কার্যত সিঁটিয়ে গিয়েছেন। সিঁড়িতে ভিড় জমে গিয়েছে। কেউ নামতে সাহস পাচ্ছেন না। যদিও, তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ নিয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। এক আধিকারিক জানান, ডিটেল দেখতে হবে। তবে ভাঙচুর করা তো অন্যায়।
১৫ ফেব্রুয়ারি এভাবেই গাফিলতিতে রোগীমৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে সিএমআরআই হাসপাতাল। সেকথা মাথায় রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় ফুলবাগান, মানিকতলা ও নারকেলডাঙা থানার পুলিশ। যদিও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাঁদের কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়।