কলকাতা:  কলকাতা, নিউটাউন, রাজারহাট থেকে বিভিন্ন জেলা। প্রোমোটিং-সিন্ডিকেট সংঘর্ষে বার বার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রক্ত ঝড়েছে। এ সব রুখতে প্রশাসনিক বৈঠক ও বিভিন্ন সভা থেকে বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এবার, কড়া বার্তা দিলেন দেশ-বিদেশের শিল্পপতিদের সামনে দাঁড়িয়ে। বললেন, বাংলায় এখন আর গোলামাল, বনধ-অবরোধ এখন হয় না। শিল্পে বাধা পেলে আমার কষ্ট হয়। আমরা কোনও বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করি না। দলের লোক হলেও তাদের রেয়াত করি না।
সোমবার শালবনির পর মঙ্গলবার ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’ থেকে কড়া বার্তা। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, মুখ্যমন্ত্রী বোঝানোর চেষ্টা করছেন, শিল্পের পথে কোনও অশান্তি তিনি বরদাস্ত করবেন না। পাশাপাশি, এ দিন ফের আহ্বান জানালেন বাংলায় বিনিয়োগের।
মুখ্যমন্ত্রী বললেন, বাংলাকে নিজের সুইট হোম ভাবুন। বাংলায় বিনিয়োগ করলে বাংলার সবকিছু আপনাদের জন্য। আমরা আমাদের হৃদয় উৎ‍সর্গ করতে পারি। বাংলায় সবরকম সম্ভাবনা রয়েছে। সবক্ষেত্রেই বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। আমরা সহিষ্ণুতাকে মর্যাদা দিই। অসহিষ্ণুতাকে নয়। বাংলায় বিনিয়োগ করলে বিশ্ব বাজার পাবেন।
এদিনের সম্মেলনে বিনিয়োগকারীদের ভূয়সী প্রশংসা কুড়োলেন মুখ্ংযমন্ত্রী। সবার একটাই কথা মমতার আমলে পরিবর্তন হয়েছে। এ দিন শিল্প সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে বাংলায় ফের বিনিয়োগের আশ্বাস দেন মুকেশ অম্বানি। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার মুকেশ অম্বানি বলেন, গত ২ বছরে পশ্চিমবঙ্গে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। আগামী তিন বছরে আরও ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। বাংলা মানেই বাণিজ্য। মমতার নেতৃত্বে ওয়েস্টবেঙ্গল বেস্ট বেঙ্গলে পরিণত হয়েছে।
কলকাতায় এসে নস্ট্যালজিক অনাবাসী ভারতীয় শিল্পপতি, লক্ষ্মী মিত্তল। শিল্পপতি বলেন, কলকাতায় আমার জন্ম, আমার বেড়ে ওঠা। সেন্ট জেভিয়ার্সে আমার পড়াশোনা। তাই কলকাতা আমার হৃদয়ে। আমি শিকড়ের টান অনুভব করছি। এখানে রাজনৈতিক স্থায়িত্ব রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিক উদ্যোগ রয়েছে। আগামী দিনে বিনিয়োগ করব।
এই শিল্প সম্মেলনের আগের দিনই শালবনিতে জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই জিন্দল গোষ্ঠীর কর্ণধার সজ্জন জিন্দল রাজ্যে আরও বিনিয়োগের আশ্বাস দেন। বলেন, আগামী চার বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ। শালবনিতে কারখানা করতে গিয়ে অভূতপূর্ব সহযোগিতা পেয়েছি। এত ভালবাসা আমি আর অন্য কোথাও পাইনি।
স্পাইস জেটের মালিক অজয় সিংহ জানিয়েছেন, অণ্ডাল বিমানবন্দর থেকে খুব তাড়াতাড়ি হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরুর জন্য দুটি উড়ান চালু করবেন।
এছাড়া সি প্লেনের ম্যানুফ্যাকচারিং হাবও তৈরি করা হবে। শিল্পপতি নীরঞ্জন হিরা নন্দানি আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী ২ বছরে, বাংলায় ১২০০ থেকে ১৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে।
বিরোধীরা কটাক্ষের সুরে বলছে, শিল্প সম্মেলনে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পাওয়া, আর সত্যিই বিনিয়োগ আসা কিন্তু এক জিনিস নয়।