কলকাতা: আর ক’দিন পরই দীপাবলি। অথচ, আলোর উৎসবের আগেই ছাড়পত্র পেয়ে গেল ‘শব্দ-দানব’! ‘চকোলেট-বোমা’ ফাটানোয় সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ!
মঙ্গলবার তারাতলা নেচার পার্ক লাগোয়া রেললাইনের ধারে ফাঁকা জায়গায়, নানা রকম বাজির নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। পর্ষদ, বাজির উৎপাদক, ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ছিলেন পুলিশ, দমকল এবং কেন্দ্রীয় সংস্থা পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভ সেফটি অর্গানাইজেশন বা পেসো-র লোকজনও। আর এই পরীক্ষাতেই সসম্মানে উত্তীর্ণ হয় চকোলেট বোমা! উঠে যায় নিষেধাজ্ঞা!
নিয়মানুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে ৯০ ডেসিবেলের ওপরে কোনও শব্দবাজি ব্যবহার করা যায় না। ১১০-১২০ ডেসিবেল মাত্রা হওয়ায় এতদিন সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ছিল চকোলেট বোমা।



তাহলে কোন জাদু-মন্ত্রে এবার পাশ করল চকোলেট বোমা?
পর্ষদ সূত্রে দাবি, ‘সাউন্ড লেভেল মিটারে’ চকোলেট বোমার শব্দমাত্রা ধরা পড়েছে ৮৫ থেকে ৮৭ ডেসিবেল। যদিও, বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, পরীক্ষার পদ্ধতিতেই গলদ ছিল। তার ফাঁক গলেই ‘বুক ফুলিয়ে’ বেরিয়ে গিয়েছে চকোলেট বোমা!
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, খেলনা পিস্তলে ফাটানো ক্যাপ, কালীপটকা (একটি যদি ফাটানো হয়) কিম্বা ‘আলু বোমা’র মতো বাজি ছাড়া ৯০ ডেসিবেলের নীচে শব্দবাজি তৈরি কার্যত অসম্ভব।


তাহলে এবার কীভাবে নামল চকোলেট বোমার শব্দমাত্রা? সারা বাংলা আতসবাজি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায় বলেন, আমরা চরিত্রগত বদল ঘটিয়েছি। চকোলেট বোমার কাগজ যত পুরু, আওয়াজ তত বেশি। আগে ৫-৬ মিমি পুরু দিতাম, এখন ৩-৪ মিমি পুরু দিচ্ছি। মশলাও কম দেওয়া হচ্ছে। তাই আওয়াজ কমানো গিয়েছে।
যদিও প্রশ্ন উঠছে, যাঁরা শব্দবাজি ফাটাবেন, তাঁদের হাতে এই ‘চরিত্র বদল’ করা চকোলেট বোমাই যে পৌঁছবে, তার নিশ্চয়তা কোথায়? তা ছাড়া, অন্যান্য বার দেখা গিয়েছে, নিষিদ্ধ থাকা অবস্থাতেই নিজের দাপট দেখিয়েছে শব্দবাজি! এই পরিস্থিতিতে দোসর হল চকোলেট বোমাও! সব মিলিয়ে এবার কালীপুজোয় অনেকের কাছেই বাড়তি টেনশনের!