কলকাতা:  কলকাতায় এসে ভুল চিকিৎসার শিকার বিহারের এক তরুণ, ২০ বছরের রাজেন শর্মা। বিহারের মুজফ্ফরপুরের বাসিন্দা এই তরুণ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। পড়ে গিয়ে ভেঙে যায় বাঁ হাতের কনুই। অভিযোগ, কলকাতায় এসে ভুল চিকিৎসার শিকার হন রাজেন। ৫ মাসে তিনবার অস্ত্রোপচার হয়। তবু ধীরে ধীরে অসাড় হয়ে যাচ্ছে তাঁর বাঁ হাত। শুকিয়ে যাচ্ছে আঙুল।

চতুর্থবার অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। পোস্তা থানায় দায়ের হয়েছে অভিযোগ। একইরকমভাবে ২০০৩ সালে তরুণ ক্রিকেটার রজনীশ পটেলের ক্ষেত্রেও ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছিল। ৫ বার অস্ত্রোপচারের পর মারা যান রজনীশ।

বিহারের বাসিন্দা রাজেনের স্বপ্ন ছিল সেনাবাহিনীর হয়ে দেশরক্ষার লড়াইয়ে নামার। কিন্তু আপাতত সুস্থ শরীরে বেঁচে থাকার লড়াই চালাচ্ছেন বছর কুড়ির তরুণ। ২০১৫ সালে তিনি সিআরপিএফে লিখিত পরীক্ষায় পাস করেন। শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষার জন্য গ্রামের মাঠে অনুশীলন করছিলেন রাজেন।

২০১৬-র জানুয়ারিতে পা পিছলে পড়ে গিয়ে বাঁ হাতের কনুই ভেঙে যায় তরুণের। সেই থেকে শুরু স্বপ্নভঙ্গের পালা। ভাল চিকিৎসার জন্য চলে আসেন কলকাতায়। এক আত্মীয়ের সূত্র ধরে ভর্তি হন কলকাতার মাড়োয়ারি রিলিফ সোসাইটি হাসপাতালে। ২০১৬ সালে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে অস্ত্রোপচার হয়। হাতে ব্যথা শুরু হয় কিছুদিনের মধ্যেই। ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে থাকে আঙুল। অভিযোগ, সমস্যার কথা জানালেও গুরুত্বই দেননি মারোয়াড়ি রিলিফ সোসাইটি হাসপাতালের চিকিৎসক সঞ্জয় কুমার। হাতের আঙুল নাড়াতে না পারায় প্রথম অস্ত্রোপচারের ১৫ দিন পরে দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার হয়। এরপর ৫ মাসে ৩ বার অপারেশন। প্রথম ২ বার মারোয়াড়ি রিলিফ সোসাইটি হাসপাতালে,  তৃতীয়বার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অপারেশন হয়।

এমআরআই রিপোর্টে দেখা যায়, প্রথমবার অস্ত্রোপচারের সময় রাজেনের হাতের একটি শিরা কেটে ফেলেন চিকিৎসক। সে কারণেই বাঁ হাতটি অকেজো হতে শুরু করেছে। চতুর্থবার অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কিন্তু তারপরেও যে রাজেন সুস্থ হবেন, তার নিশ্চয়তা মেলেনি।