কলকাতা: তখন রাত প্রায় সাড়ে আটটা। গোলাপ গুচ্ছ নিয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের মুজফ্ফর আহমেদ ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তি। পোস্টম্যানের মতো তিনি তা পৌঁছে দিলেন সিপিএম পলিটব্যুরো তথা বর্ষীয়ান বাম নেতা বিমান বসুর কাছে। এখন প্রশ্ন পক্ককেশ বিমান বসুকে হঠাৎ ৮০টি তাজা গোলাপ কে পাঠালেন? আর সংখ্যাটাই বা ৮০-ই কেন? আর সেটা ১ জুলাই বা কেন দেওয়া হল?
কথায় আছে, কান টানলে মাথা আসে। হলও তাই। গোলাপের গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে পৌঁছানো গেল প্রেরকের ঠিকানায়। জানা গেল আলিমুদ্দিন থেকে বেশি দূরে নয়, মৌলালিতে প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধানভবন থেকেই এসেছিল সেই রক্তিম গোলাপের গুচ্ছ। প্রেরক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ সোমেন মিত্র। আর ৮০টি গোলাপ পাঠানোর নেপথ্য রয়েছে ১ জুলাই।
বুধবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিনেই আশি হলেন বিমান। সেই উপলক্ষেই ‘বন্ধু’ সোমেনের তরফে ‘লালবাড়ি’-তে বিমানের জন্য এসেছে অমূল্য উপহার। তিনি তা গ্রহণও করেছেন। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিন পালন অনুষ্ঠানে সামিল হওয়ার জন্য বিমান বসুকে আগেই ফোন করেছিলেন সোমেন মিত্র। সকালে তাঁদের কথাও হয়। কিন্তু দলীয় বৈঠক থাকার কারণে আসতে পারেননি বিমান। তবে জোটের রাস্তায় যেন কোনও ‘জট’ না তৈরি হয় তাই বিধানভবনে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর জন্মদিন পালনে সিপিএম থেকে পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা বিধানসভার বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীকে। তিনি সহ আরও বাম নেতারা বুধবার ওই অনুষ্ঠানে সামিল হন এবং ভোট পূর্ববর্তী জোটের পালে হাওয়াকে আরও জোরদার করেন। সোমেন মিত্র সাফ জানিয়ে দেন, “মতের অমিল থাকলেও সময়ের প্রয়োজনেই দুই দল একসঙ্গে।”
এরপরই প্রক্রিয়াকে আরও মসৃণ করতে একবারে আলিমুদ্দিনে জন্মদিনে লাল গোলাপ পাঠিয়ে দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। সঙ্গে ছিল সন্দেশও। এখন সমালোচকদের অনেকরই প্রশ্ন, এই লাল গোলাপ আগামী বসন্তকে আদৌও মসৃণ করবে তো, নাকি সেই পুরনো কণ্টকেই তৈরি হবে ‘বৈরিতা’! উত্তর দেবে সময়ই।