কলকাতা: ফের জোটে ধাক্কা। পিছু হটল আলিমুদ্দিন। কাল মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কংগ্রেসের ডাকা মিছিলে যাচ্ছে না সিপিএমও। বামফ্রন্ট পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী এদিন ঘোষণা করে বলেন, আগামীকালের মিছিলে যাচ্ছি না, কংগ্রেসকে জানিয়ে দিয়েছি। কংগ্রেসের ইস্যুতে নৈতিক সমর্থন আছে।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, শনিবার কংগ্রেসের মিছিলে সিপিএমের যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্তে ফের একবার হোঁচট খেল জোট। বাম পরিষদীয় দলনেতা অবশ্য ভাঙবেন কিন্তু মচকাবেন না। বললেন, আলোচনা করে ঠিক হয়েছে, এ ব্যাপারে এখনই মনস্থির করছি না। আরও আলোচনা দরকার। আগামীকাল যাচ্ছি না, কংগ্রেসকে জানিয়েছে দিয়েছে। ওরা বুঝেছে। গণতন্ত্র, আক্রমণ, ধর্মনিরপেক্ষতা, যে সব ইস্যুতে জোটবদ্ধ হয়েছিলাম, সেই সব ইস্যুতে আমরা একসঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব। সব কাজ একসঙ্গে করতে হবে তার কোনও মানে নেই।
বিরোধী দলনেতাও প্রকাশ্যে একে জোটে ধাক্কা বলে মানতে নারাজ। আব্দুল মান্নান বললেন, জোটে ধাক্কা লাগেনি। এটা ওদের সাংগঠনিক ব্যাপার, সূর্য-অধীরের উপর ছেড়ে দিন, বিধানসভা শেষ হতে দিন, দেখবেন আবার আমরা একসঙ্গে।
মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কংগ্রেসের ডাকা মিছিলে প্রথমে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সূর্যকান্ত মিশ্রকে। পরে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীকে আমন্ত্রণ জানান বিরোধী দলনেতা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক প্রথমেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি শনিবার দলের কাজে রাজ্যের বাইরে থাকায় মিছিলে যেতে পারবেন না। আলিমুদ্দিন অবশ্য প্রথম থেকেই মিছিলে যোগ গিতে আগ্রহী ছিল। তারা এও চেয়েছিল, শরিকদলগুলির বিধায়কদের সঙ্গে নিয়েই মিছিলে যান সুজন চক্রবর্তী। সেই মতো, শরিক দলগুলির বিধায়কদের সঙ্গে সুজন কথাও বলেন।
কিন্তু, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই, সব দলেরই নেতৃত্ব জানিয়ে দেয়, তাঁদের বিধায়করা কংগ্রেসের মিছিলে যাবেন না। এতেও হাল ছাড়েনি আলিমুদ্দিন। শুক্রবার বৈঠকে বসে বাম পরিষদীয় দল। কিন্তু সেখানেও চিড়ে ভেজেনি। শরিকরা নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে জানিয়ে দিয়েছে, কংগ্রেসের মিছিলে তারা নেই।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, শরিকদের এই চাপে, আলিমুদ্দিনের সামনে শ্যাম রাখি না কূল রাখির মতো অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তাদের ব্যাকফুটে গিয়ে ডিফেন্সিভ স্ট্রোকই নিতে হল। সিপিএম সিদ্ধান্ত নিল, তারাও কংগ্রেসের মিছিলে যাবে না। যা জোটের ফাটলকে স্পষ্ট করল বলেই মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।