অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা: সামনে গঙ্গার অনন্ত জলরাশি, হাতে বই। সময় কাটানোর এর চেয়ে ভাল উপায় পাওয়া কঠিন। সেই উপায়কে এবার হাতের নাগালে এনে দিচ্ছে ডব্লিউবিটিসি। উদ্যোগ মূলত ছোটদের জন্য। অবশ্যই শামিল হতে পারেন বড়রাও। আগামিকাল, বুধবার থেকেই শুরু হয়ে যাবে এই ব্যবস্থা। নাম দেওয়া হয়েছে 'বোট লাইব্রেরি'।
পরিবহণ দফতরের সিদ্ধান্ত, একটি লঞ্চ এবার থেকে নির্দিষ্ট থাকবে বোট লাইব্রেরি হিসেবে। সোম থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সওয়ার হওয়া যাবে এই বিশেষ লঞ্চে। বিভিন্ন বয়সের শিশু ও কিশোরদের কথা মাথায় রেখে রাখা হচ্ছে পাঁচশোর বেশি বই। মূলত বাংলা ও ইংরেজি ভাষার বই বেছে নেওয়া হচ্ছে লাইব্রেরি সাজিয়ে তুলতে। চিরকালীন ক্লাসিকস যেমন লাইব্রেরির তাকে থাকবে, তেমনই থাকবে সমকালীন সাহিত্য। বাদ পড়ছে না জ্ঞান বিজ্ঞানের বিভিন্ন বইও। আর সেসব বই পড়া যাবে গঙ্গার সান্নিধ্যে। সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতেই চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাবে নিজের পছন্দের সাহিত্যে।
শুধু বই না। বিনোদনের পসরা মজুত রাখতে বোট লাইব্রেরিতে থাকছে সঙ্গীতের আয়োজন। বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাবে ওয়াইফাই। সেই ওয়াইফাই ব্যবহার করে ছাপানো বইয়ের পাশাপাশি ই-বুকও পড়া যাবে এই লঞ্চে। বছরভর বিভিন্ন ইভেন্টেরও ভাবনা রয়েছে উদ্যোক্তাদের। তবে সবটাই হবে বোট লাইব্রেরির মূল ভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে। প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বই উদ্বোধন অথবা কবিতার আসরের মতো কিছু অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে এই বিশেষ লঞ্চে। পাশাপাশি ছোটদের জন্য থাকবে গল্পবলার আসর। পরিচিত সাহিত্যিকরা ছোটদের শোনাবেন নিজেদের লেখা গল্প। ডব্লিউবিটিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজনভির সিংহ চহ্বানের কথায়, "গঙ্গার সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে সবাইকে বই পড়ার সুযোগ করে দেওয়াই লক্ষ্য। মূলত শিশু ও কিশোরদের বিনোদন মাথায় রেখে এই আয়োজন হলেও বড়রাও যথেষ্ট আনন্দ পাবেন।"
বিশেষ ভাবে সজ্জিত এই বোট লাইব্রেরির স্বাদ উপভোগ করা যাবে সোম থেকে শুক্রবার। সপ্তাহের এই পাঁচদিন তিনবার করে ছাড়বে বই বোঝাই লঞ্চ। সকাল ১১টা, দুপুর ১.১৫ এবং বিকেল ৩টেয় ছাড়বে এই লঞ্চ। প্রতিটি ট্যুর হবে তিন ঘণ্টার। আঠেরোর কমবয়সীদের জন্য ভাড়া নির্ধারিত হয়েছে ৫০ টাকা। বড়দের জন্য ভাড়া ১০০ টাকা করে। একসাথে প্রায় ২০ জন এই লঞ্চে সওয়ার হতে পারবেন। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একসাথে অনেককে নিয়ে সফরে যেতে চাইলে দিতে হবে ৪০০০ টাকা।