প্রকাশ সিনহা,কলকাতা:  গরু পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত বিএসএফের কম্যান্ডান্ট? সিবিআই তদন্তে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি।বুধবার এনামুল শেখ নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালায় সিবিআই। আর এনামুলকে ঘিরে তদন্তের জাল ছড়াতেই ‘সর্ষের মধ্যে ভূতের সন্ধান মেলে!

সিবিআই সূত্রের দাবি, একা এনামুল নন! আন্তর্জাতিক গরু পাচার চক্রের সঙ্গে একাধিক বিএসএফ অফিসার এবং সীমান্তবর্তী কিছু জেলার পুলিশ অফিসাররাও জড়িত।তদন্তে প্রকাশ্যে এসেছে এক বিএসএফ অফিসারের নাম! সিবিআই সূত্রের দাবি,বর্ডার সিকিওরিটি ফোর্সের যে অফিসারের নাম এই চক্রে উঠে এসেছে, তাঁর নাম সতীশ কুমার।সল্টলেক এবং মুর্শিদাবাদের লালগোলায় বাড়ি আছে ওই বিএসএফ অফিসারের।

বুধবার সকাল ১০টার আশেপাশে সতীশ কুমারের সল্টলেকের বাড়িতে পৌঁছন সিবিআইয়ের অফিসারেরা। কিন্তু বাড়িতে ছিলেন না সতীশ। এরপর তাঁর বাড়ি সিল করে দেন গোয়েন্দারা।

বিভিন্ন সূত্র থেকে সিবিআই জানতে পেরেছে, বিএসএফ-এর ওই কমান্ডান্ট পদ মর্যাদার অফিসার বর্তমানে ঝাড়খণ্ডে পোস্টেড।কিন্তু, গরু পাচার চক্রের পাণ্ডা হিসেবে অভিযুক্ত এনামুল আর বিএসএফ-এর অফিসার সতীশ কুমারের মধ্যে কীসের সম্পর্ক? সেই সূত্র সন্ধান করতেই গিয়েই বিস্ফোরক তথ্য হাতে এসেছে গোয়েন্দাদের। সিবিআই সূত্রের দাবি, সতীশ কুমারের ছেলেকে নিজের কোম্পানিতে চাকরিতে দিয়েছিলেন গরু পাচারকারী এনামুল!!

খাস কলকাতায় বসে, পুলিশ-প্রশাসনের চোখে ধূলো দিয়ে গরু পাচার চক্রের চক্র চালানো কি  সম্ভব? এখানেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, প্রভাবশালী যোগ না থাকলে এনামুল শেখের এই সাহস মোটেই হত না!

যদিও, এনামুল শেখ এই সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। গরু পাচার চক্রের প্রভাবশালী-যোগ খুঁজতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সিবিআইয়ের হাতে এসেছে। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি,সীমান্তে মাঝেমধ্যে গরু পাচারকারীরা ধরা পড়ে। গরু বাজেয়াপ্ত করে বিএসএফ। সেই গরুগুলি কাস্টমসের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে কাস্টমস সেই গরুগুলি টেন্ডার ডেকে বিক্রি করে দেয়।সিবিআইয়ের দাবি, কাস্টমসের সেই টেন্ডার ধরতেন এনামুল শেখ।

বাজেয়াপ্ত করা গরু কিনে নিতেন নামমাত্র দামে।এরপর কাস্টমসের সেই নথি দেখিয়েই গরু চলে যেত বাংলাদেশে।গোয়েন্দাদের দাবি, কাস্টমসের নথি ব্যবহার করে যত সংখ্যক গরু সীমান্তের ওপারে পাঠানো যায়, তার চেয়ে অনেক বেশি গরু পাচার হত বাংলাদেশে।

এদিন গরু পাচার চক্রের তদন্তে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও একাধিক রাজ্যে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। সেই তালিকায় আছে,পঞ্জাব ,উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ,এবং ছত্তীসগঢ়ের রায়পুর।