কলকাতা: গঙ্গাসাগর মেলার কারণ দেখিয়ে বিজেপির যুব শাখাকে মোটরবাইক মিছিল করার অনুমতি দিতে চায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন। তবে রাজ্য সরকারের যুক্তি মানতে চাইল না কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক ভারতীয় জনতা যুব মোর্চাকে (বিওয়াইজেএম) তাদের কর্মসূচি পালনে সম্মতি দিয়ে বলেন, কোনও রাজনৈতিক দলের মিছিল করার অধিকার নাকচ করা যায় না।
১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকী সামনে রেখে প্রতিরোধ সঙ্কল্প অভিযান নামে মোটরবাইক মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছে যুব মোর্চা। দক্ষিণের কাঁথি থেকে উত্তরে কোচবিহার পর্যন্ত বাইক মিছিল করবে বলে জানায় তারা। ৫ জানুয়ারি তারা মিছিলের অনুমতি চাইলে গতকাল প্রত্যাখ্যান করে রাজ্য পুলিশ।
১২ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে গঙ্গাসাগর মেলা।
এদিন হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত সওয়াল করেন, গঙ্গাসাগর মেলা নির্বিঘ্নে চালাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য গোটা রাজ্য থেকে প্রচুর পুলিশকর্মী সেখানে নিয়োগ করতে হবে। গঙ্গাসাগর মেলার সময় দুটি সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তারপর আর কোনও মিছিল, সমাবেশের জন্য পুলিশকর্মীর বন্দোবস্ত করা সম্ভব হবে না। তিনি প্রস্তাব দেন, বিজেপির যুব শাখা ২৬ জানুয়ারির পর বাইক মিছিল করুক, যদিও তা খারিজ করে দেয় আবেদনকারী সংগঠনটি।
বিচারপতি বলেন, রাজ্য সরকার তো সভা, সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও ১২ জানুয়ারি বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কর্মসূচি পালনে প্রয়োজনীয় অনুমোদন পেয়েছে। অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার, প্রশাসন বৈষম্য করতে পারে না।
আইন রূপায়ণের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক অসুবিধা বাধা হতে পারে না বলে অভিমত জানিয়ে বিচারপতি বসাক বলেন, বাইক মিছিল আর গঙ্গাসাগর মেলায় যোগ দিতে আসা ভক্তদের রুট হয়তো দু-একটি জায়গায় মিলেমিশে যেতে পারে, কিন্তু তাতে নিশ্চয়ই রাস্তাঘাট, লোকচলাচল বন্ধ হয়ে যাবে না। তবে হাইকোর্ট বলেছে, বিজেপি যুব মোর্চার বাইক মিছিল যেন সুশৃঙ্খলভাবে হয়, উদ্যোক্তারা কোনও জায়গায় পৌঁছনোর অন্তত আধ ঘন্টা আগে পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়ে রাখেন যাতে যানচলাচল সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যায়। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তাদের যাবতীয় নির্দেশ মেনে বাইক মিছিল করতে হবে।