সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: ঘুড়ি ওড়ানোয় ব্যবহৃত চিনা মাঞ্জা ও সিন্থেটিক সুতোর ব্যবহার নিষিদ্ধ করল কলকাতা হাইকোর্ট।
বিগত কয়েক বছর ধরে কলকাতায় চিনা মাঞ্জায় জখম হয়েছে একাধিক মানুষ। ঘটেছে মৃত্যুও। এর প্রেক্ষিতে চিনা মাঞ্জার ব্যবহার বন্ধের দাবিতে, হাইকোর্টে মামলা করেন এক আইনজীবী।
এর আগে গত ২৫ মার্চ, চিনা মাঞ্জার ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার।
হাইকোর্ট জবাব তলব করলে, সেকথা জানায় রাজ্য।কিন্তু মামলাকারীর অভিযোগ, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেও কোনও প্রচার হয়নি। ফলে চিনা মাঞ্জার ব্যবহারও বন্ধ হয়নি।
যার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঘুড়ি ওড়ানোয় ব্যবহৃত চিনা মাঞ্জা ও সিন্থেটিক সুতোর ব্যবহার নিষিদ্ধ করল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবিএন রাধাকৃষ্ণণের ডিভিশন বেঞ্চ।
এই নির্দেশ রাজ্য সরকারকে কঠোরভাবে মানতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যাপক ভাবে প্রচার চালানোরও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।


গত ১৭ মে একবালপুরে চিনা মাঞ্জায় গুরুতর জখম হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার মামলাও যুক্ত হয় আইনজীবীর দায়ের করা মামলার সঙ্গে।

এর আগে ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর হাওড়ার বাসিন্দা হাইকোর্টের আইনজীবী দম্পতি মেয়েকে নিয়ে নিজেদের নতুন গাড়িতে চড়ে ইকোপার্কে আসছিলেন। গাড়ির সান রুফ দিয়ে মুখ বের করে দাঁড়িয়েছিল তাঁদের ১০ বছরের মেয়ে জয়নিনি। মা উড়ালপুল পার হওয়ার পর দম্পতি দেখতে পান, মেয়ের গলায় গভীর ক্ষত। বোঝা যায়, ঘুড়ির মাঞ্জাতে লেগেই বিপত্তি।
২১ অক্টোবর, ২০১৮-তে মা উড়ালপুলের ওপর দিয়ে বাইক চালিয়ে যাওয়ার সময়, চিনা মাঞ্জায় গলা কেটে যায় হাওড়ার বাসিন্দা সুরেশ মজুমদারের।

ওই বছরই ২ ডিসেম্বর,মা উড়ালপুল দিয়ে স্কুটারে করে যাওয়ায় সময় চিনা মাঞ্জার ঘষায় জখম হন এক চিকিতসক।
এরপর ২০১৯-এর ১০ জানুয়ারি, মা উড়ালপুল দিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় চিনা মাঞ্জায় ঠোঁট কেটে যায় হাওড়ার বাসিন্দা এক যুবকের।
ঠিক এক মাসের মাথায় ১০ ফেব্রুয়ারি, বারুইপুরের রেল ওভারব্রিজ দিয়ে মোটরবাইক নিয়ে যাওয়ার সময় চিনা মাঞ্জায় জখম হন বছর তেত্রিশের এক যুবক।
২০১৬ সালে গোটা দেশে চিনা মাঞ্জা তৈরি, বিক্রি, কেনা ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত।
সুপ্রিম কোর্ট ওই নির্দেশ বহাল রেখেছে।
কিন্তু, তার পরেও সব নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ধারাল এই সুতো। এবার সেই চিনা মাঞ্জার ব্যবহার নিষিদ্ধ করল কলকাতা হাইকোর্ট।