কলকাতা: দল, নেতাদের বিরুদ্ধে এবিপি আনন্দে সাক্ষাত্কারের জের। ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। শাস্তি-অনুমোদনে, যাতে এতটুকুও দেরি না হয়, সে জন্য বার্তা গেল এ কে গোপালন ভবনে।
সোমবার এবিপি আনন্দে এই বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারের পর ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় যে দলে বড়সড় শাস্তির মুখে পড়তে চলেছেন তা একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল। আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল সিপিএম।
বুধবার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকের শুরুতেই সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ঋতব্রত সাক্ষাৎকারে যা বলেছেন, তা ক্ষমাহীন অপরাধ। উনি চাইছেন, বহিষ্কৃত হতে। সিপিএম থেকে বহিষ্কারকেই উনি পুরস্কার বলে মনে করছেন। সুতরাং ওঁকে দলে রাখার আর কোনও মানে হয় না।
এরপরেই শুরু হয় আলোচনা। সম্পাদকমণ্ডলীর সব সদস্যই এক বাক্যে বহিষ্কারের পক্ষে মত দেন। ২-৩ জন বলেন, এই মুহূর্তেই বহিষ্কার করে সংবাদমাধ্যমকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হোক।
বিমান বসু তখন বলেন, রাজ্য কমিটি থেকে ঋতব্রতর অপসারণ এখনও কেন্দ্রীয় কমিটির বিবেচনাধীন। তার ওপর উনি সাংসদ। ফলে, ওঁর বিরুদ্ধে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে, অনুমোদন নেওয়া জরুরি।
বৈঠক চলাকালীন ফোন করা হয় সীতারাম ইয়েচুরিকে। বার্তা দেওয়া হয়, ১৩-১৫ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। কিন্তু এতদিন বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা যাবে না। পলিটব্যুরো সদস্যরা যত শীঘ্র সম্ভব বসে জরুরি ভিত্তিতে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিন।
বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানার পর সুর আরও চড়িয়েছেন সিপিএমের তরফে রাজ্যসভায় যাওয়া ঋতব্রত। বলেছেন, প্রকাশ-বৃন্দা দিল্লিতে, সেলিম কোটারি কলকাতায়। কেউ তাদের বিরুদ্ধে বলেনি। কাউকে বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধতে হত।
২১ বছর আগে এসএফআইয়ের কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন ঋতব্রত। হয়েছিলেন আশুতোষ কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক। পৌঁছেছিলেন এসএফআইয়ের শীর্ষ পদে। দলের ছাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদককেই সিপিএম রাজ্যসভায় বেছে নিয়েছিল। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে সেই তাঁকেই বহিস্কার করল সিপিএম।