কলকাতা: সরকারের নীতি সংক্রান্ত অনৈতিক প্রচার আর চলবে না। এমন হলে শাস্তির বিধান। সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ও যদি কারও আচরণে বিরুদ্ধাচার দেখে, তাও শাস্তিযোগ্য।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া বিধির এই ধারা নিয়ে জোর বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বছর তিনেক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেই বিধির খসড়া পাঠানো হয় রাজভবনে। একাধিক সংযোজন সহ সেই বিধি রাজভবন থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এই বিধিতে বলা আছে, রাজ্য সরকারের নীতি সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমে অনৈতিক প্রচার করলে, তা শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসেবে গণ্য হবে। আরও বলা হয়েছে, রাজ্য সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি কারও এমন আচরণ দেখে, যা সরকার ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ক্ষতিকারক, তা-ও শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসেবে গণ্য হবে।
এক্ষেত্রে কী কী শাস্তি হতে পারে? তাও বলা হয়েছে বিধিতে। সেক্ষেত্রে অভিযুক্তকে ভর্ৎসনা করা হতে পারে, তাঁর বেতনবৃদ্ধি বা পদোন্নতি আটকে দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পদাবনতি, কম্পালসরি রিটায়ারমেন্ট, চাকরি থেকে ছাঁটাই, এমনকী, বরখাস্ত পর্যন্ত করা হতে পারে।
কীভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে? বিধিতে বলা আছে, কারও বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উঠলে শৃঙ্খলারক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক তদন্ত করবে। তারা নিজেরাও এই তদন্ত করতে পারেন অথবা অন্য কাউকে দিয়ে তদন্ত করাতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শৃঙ্খলারক্ষার দায়িত্বে থাকবেন উপাচার্য। আর অশিক্ষক কর্মচারীদের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রার। তবে তারা শুধু ভর্ৎসনা করতে পারবেন। যদি তাদের মনে হয় যে, অভিযোগ আরও গুরুতর, সেক্ষেত্রে তদন্তে পাওয়া তথ্য এগজিকিউটিভ কাউন্সিলকে দিতে হবে। যারা এবিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষয়টি কর্মসমিতিতে আলোচনা হবে। সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যাবয়ের প্রস্তাবিত বিধিতে এই বিতর্কিত ধারাগুলি ছিল না। রাজভবনে পাঠানোর পর তা সংযোজিত হয়েছে।
বিধির বিষয়বস্তু প্রকাশ্যে আসায় শিক্ষা মহলের একাংশে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, স্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের কোন আচরণ ক্ষতিকারক, তা সরকার কেন ঠিক করবে? এটা কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা নয়? বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপের চেষ্টা নয় কি?