কলকাতা:  ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগে কাঠগড়ায় শহরের তিনটি হাসপাতাল। ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রোগীর আত্মীয়রা।


অ্যাপোলো, উডল্যান্ডসের পর আমরি। ভুল চিকিত্সায় আড়াই বছরের শিশুকন্যার মৃত্যুর অভিযোগ। ক’দিন ধরেই জ্বর কমছিল না আড়াই বছরের ঐত্রি দে'র। গত সোমবার কামালগাজির বাসিন্দা ওই শিশুটিকে মুকুন্দপুরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিবারের দাবি, মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠছিল। আজ সকালে তাকে একটি ইঞ্জেকশান দেওয়া হয়। এর পরই আচমকা শিশুটির মৃত্যু হলে আত্মীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। হাসপাতালে শুরু হয় বিক্ষোভ। কর্তৃপক্ষের দাবি, শিশুটির শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা ছিল। তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু আজ সকালে বমি হওয়ায় তাকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল। ঘটনায় এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।


এদিকে অ্যাপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে ফের চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দেড় ঘণ্টা পর পরীক্ষা করায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি আত্মীয়দের। কসবার বাসিন্দা বছর ৫৪-র ওই ব্যক্তির নাম অলোক দাস। রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের কর্মী ওই ব্যক্তি শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। আজ পৌনে ৭টা নাগাদ তাঁকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। অভিযোগ, দেড় ঘন্টা অ্যাম্বুল্যান্সে পড়ে থাকা সত্ত্বেও জরুরি বিভাগে কোনও বেড ফাঁকা না থাকায় তাঁর নূন্যতম চিকিৎসা করা হয়নি। পরে চিকিত্সকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর পরই পরিবারের তরফে ফুলবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। হাসপাতালের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।


আজই রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত আলিপুরের উডল্যান্ডস হাসপাতালও। হাসপাতালে মৃতের আত্মীয়দের বিক্ষোভ। মৃতের নাম গৌতম পাল। ১৫ জানুয়ারি মা উড়ালপুলে দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর তাঁকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাঁ পা ও ডান হাতে আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। গতকাল রাত ১০টা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। এর পরই আত্মীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরিবারের অভিযোগ, চিকিত্সা সংক্রান্ত নথি এখনও দেওয়া হচ্ছে না। মৃত্যুর কারণ এখনও জানানো হয়নি বলেও দাবি আত্মীয়দের। হাসপাতালের বিরুদ্ধে আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। প্রতিক্রিয়া মেলেনি উডল্যান্ডস কর্তৃপক্ষের।


তিনটি ঘটনাতেই হাসপাতালের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যদিও গাফিলতি কিম্বা ভুল চিকিৎসার অভিযোগ কোনও হাসপাতালই মানতে চায়নি। কিন্তু চরম সত্যিটা হল, ফুটফুটে ঐত্রির আর কোনওদিন মার কোলে ফিরবে না! গৌতম কিম্বা অলোককেও আর কোনওদিন ফিরে পাবে না তাদের পরিবার।