কলকাতা: ক’দিন ধরেই সঙ্গী ছিল উত্কণ্ঠা। কিন্তু, এক ফোনেই যাবতীয় শঙ্কার অবসান। তৃতীয়বারের চেষ্টায় অবশেষে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করলেন দেবরাজ। পরিবার খুশি ছেলের সাফল্যে।

প্রকৃতির পরাক্রমের কাছে দু’বার মাথা নত করতে হয়েছিল। স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়ে নেমে আসতে হয়েছিল এভারেস্ট থেকে। কিন্তু স্বপ্নটাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তিনি। সেই জেদই তাঁকে সাফল্যের মুখ দেখাল। তৃতীয়বারের চেষ্টায় এভারেস্ট জয় করলেন কলকাতার ছেলে দেবরাজ দত্ত। আট কৃতী বাঙালির এক জন।

৩১ মার্চ বেহালা চৌরাস্তার এই বাড়ি থেকে অভিযানে বেরিয়েছিলেন দেবরাজ। তারপর থেকে উৎকণ্ঠাই ছিল নিকটাত্মীয়দের সঙ্গী। ২০ মে দেবরাজের ফোন আসতেই আনন্দের বাঁধ ভাঙে পরিবারের।

প্রথমবার এভারেস্ট অভিযানে গেলেও, তুষার ঝড়ের মুখে পড়তে হয়েছিল দেবরাজকে। ১৯ শেরপার মৃত্যুর জেরে নেমে আসতে হয়েছিল। দ্বিতীয়বার তাঁর এভারেস্ট জয়ের স্বপ্নে বাধ সেধেছিল ভূমিকম্প।

কিন্তু তৃতীয় বার জয় ছিনিয়ে আনলেন তিনি। অভিযাত্রী দলের মধ্যে তিনিই প্রথম পা রাখেন এভারেস্টের চূড়োয়।
ছোটবেলায় বইমেলা থেকে একটি বই কিনে এনেছিলেন বাবা। সেটা পড়ার পর থেকেই পাহাড়ের প্রেমে পড়ে যান দেবরাজ। দ্বাদশ শ্রেণি থেকেই নিতে শুরু করেন পর্বতারাহনের প্রশিক্ষণ।

সময় যত এগিয়েছে, পাহাড়ের প্রতি দেবরাজের প্রেম আরও গাঢ় হয়েছে। মাঝেমধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে অর্থ। কিন্তু এই প্রশ্নে পরিজন ও শুভান্যুধায়ীদের বরাবর পাশে পেয়েছেন দেবরাজ।

এই ভালবাসার প্রতিদান বারবার দিয়েছেন দেবরাজ। ভারতীয় সেনা ও বিদেশি অভিযাত্রী দল যা করতে পারেনি, সম্প্রতি সেটাই সম্ভব করেছেন দেবরাজ। বিশ্বের প্রথম অভিযাত্রী হিসেবে ‘প্লেটু পিক’ জয় করেছেন তিনি! ঘুচিয়েছেন এই শৃঙ্গের ‘ভার্জিন-তকমা’।

বছরের ছ থেকে আট মাস বাড়ি ছেড়ে পাহাড়েই পড়ে থাকতেন দেবরাজ।

শুধুই ভালবাসার টানে। ১৯ মে সেই প্রেমই যেন পরিণতি পেল পাহাড়িয়া-দেবরাজের জীবনে...

বাহাদুর ছেলের ঘরে ফেরার অপেক্ষায় আত্মীয়রা।