২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে নারদ নিউজের সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদের কাছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত অসম্পাদিত ভিডিওটির সত্যতা আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করে দেখেনি।
ম্যাথু: স্যার ৫ লাখ আছে। এই সময়ে টাকা জোগাড় বেশ কঠিন। হাওয়ালার রাস্তাও বন্ধ।
সুলতান: ঠিক আছে।
(একটার পর একটা টাকার বান্ডিল সাজিয়ে দিলেন ম্যাথু। সুলতান সরিয়ে রাখলেন। এক জন এসে সেগুলো নিয়ে গেল।)
ম্যাথু: ভোট তো এসে গেল। আপনার কী আরও চাই।
সুলতান: আরও অন্তত ৫ চাই। আমার সাহায্য সব সময়ে আপনারা পাবেন। যখন যা বলবেন, ফোন বা চিঠি, কাউকে বলে দেওয়ার দরকার হলে... আমি আছি। মোট ১০ লাগবে।
ম্যাথু: লবিইংও লাগবে স্যার।
সুলতান: লবিইংও করে দেব।
ম্যাথু: স্যার আপনার ভোট কবে?
সুলতান: ৩০ তারিখ।
ম্যাথু: আমি আরও ৫ দিয়ে যাব।
সুলতান: ২৫-এর মধ্যে দিয়ে যাবেন। এখন ভোটের খরচ খুব বেড়ে গিয়েছে।
ম্যাথু: ইকবালভাই খুব সাহায্য করছেন। অনেকের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন।... মুকুল রায়ের সঙ্গে একটু যোগাযোগ করতে চাই...
সুলতান: না। মুকুলের ওখানে যাবেন না। ও তো প্রার্থী নয়। যারা প্রার্থী আপনি কেবল তাদেরই সাহায্য করুন। সেটাই ভাল।
ম্যাথু: ইকবালভাই বলছেন আরামবাগের প্রার্থীকে একটু দেখতে, ওই ভদ্রমহিলা...
সুলতান: হ্যাঁ। আরামবাগে দরকার। ও জিতবে।
ম্যাথু: কে কে জিতবে তাদের একটা লিস্ট আপনি দেবেন, আমি তাদের কাছে যাব।
সুলতান: আমি দিয়ে দেব। ওদের কাছেই যাবেন। মুকুল-টুকুল দরকার নেই। কাকলির সঙ্গে কথা বলিয়ে দিচ্ছি। পুরো নাম?
ম্যাথু: সন্তোষ শঙ্করন।
সুলতান: আমি সন্তোষ নামটাই সকলকে বলছি।
ম্যাথু: ওকে।
সুলতান: কাকলির জন্য বারাসতে যেতে হবে।
(এক জনকে ডেকে বললেন— প্রসূন, কাকলি আর দীনেশকে একটু ধরে দাও।)
ম্যাথু: প্রসূন তো হাওড়ায়?
সুলতান: ওর জন্য হাওড়ায় যাবেন। কাছেই।
ম্যাথু: তৃণমূল কত জিততে পারে?
সুলতান: ৩০-৩২টা বাঁধা বলছে এনডিটিভি।
ম্যাথু: কিন্তু তৃণমূলের অবস্থানটা কী হবে? শুনেছি দিদি খুব আনপ্রেডিক্টেবল। আজ এক কথা বলেন, তো কাল অন্য কথা? বিজেপিকে খোলাখুলি সমর্থন করবেন বলে মনে হয় না।
সুলতান: সরাসরি সমর্থন নয়। ইস্যু অনুযায়ী সাপোর্ট দেওয়া হবে।
ম্যাথু: আপনাকে তো তৃণমূলের তরফে মুসলিমদের মুখ বলা হয়?
সুলতান: হ্যাঁ। ঠিকই বলেছেন। (এক জন ফোন এনে দেয়।) দীনেশভাই, সুলতান। সন্তোষ ফ্রম চেন্নাই। আমার চেনা লোক। আপনার নম্বর দিয়েছি, ফোন করবে। একটু দেখবেন। বুদ্ধ-সুভাষ ভুলে যান। এখন আমাদের সময়। আপনি দিন ঠিক করুন, আমি যাব। হ্যাঁ... ফোন করবে।
ম্যাথু: ঠিক আছে।
সুলতান: ফোনে সময় ঠিক করে চলে যাবেন।
ম্যাথু: কাকলিদেবী ডাক্তার, না?
সুলতান: হ্যাঁ। আমার ছেলেও তো ডাক্তার।
ম্যাথু: শুনেছি দুবাইয়ে জুতোর দোকান আছে আপনার, কোথায়?
সুলতান: একেবারে বাজারে। দুবাইয়ে আমার অফিসও আছে।
ম্যাথু: দুবাই ইন্টারনেট— ওটা আমাদের।
(এক জন ফোন এনে বলে— প্রসূন।)
সুলতান: প্রসূনভাই। আমার চেনা লোক সন্তোষ। ফোন করবে, কথা বলে নেবেন। সে আপনাকে সাহায্য করবে।... বুঝেছেন তো?
ম্যাথু: ঠিক আছে।
(এক জন ফোন এনে চাপা গলায় কিছু বলেন। সুলতান ফোন ধরেন)
সুলতান: সুলতান আহমেদ বলছি। ইলেকশন লড়ছি। আপনার কোনও হেল্প নেই, বাবরভাই। এত বড় নির্বাচন, মালদা-দিনাজপুরের বাইরে তাকাবেন না?... ছেলেকে বলুন এই নম্বরে যেন আমাকে ফোন করে। আজ আর কাল কলকাতায় আছি। অবশ্যই আসে যেন। ওকে...
ম্যাথু: আপনি তো জানেন, সেটিং না করলে কোথাও কাজ পাওয়া যায় না। কোত্থাও না।
সুলতান: জানি।
(এক জন ফোন দিয়ে বলে— কাকলি।)
সুলতান: কাকলি। ফার্স্ট ক্লাস ক্যাম্পেন করছো। গায়ে ওড়না দিয়ে, মাথায় দোপাট্টা দিয়ে। সব দেখছি। মুসলিম ভোট সব আসবে। আমিও যাব। আমার এক জন যাবে। হেল্প করতে। সন্তোষ ফ্রম চেন্নাই। ফোন করে নেবে।
ম্যাথু: দীনেশকে ফোন করব। ৫ লাখ দিলেই হবে তো?
সুলতান: হ্যাঁ হ্যাঁ। যথেষ্ট। ব্যস।