কলকাতা: সামনে পঞ্চায়েত ভোট। সেই লক্ষ্যেই এবার বাজেটে গ্রাম বাংলার দিকে নজর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের রাজ্য বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। গ্রামের ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে বাজেটে। ১ কোটি টাকা মূল্য পর্যন্ত সম্পত্তিতে স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড় ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী। গ্রামাঞ্চলে এই হার ৬ শতাংশ থেকে কমে ৫ শতাংশ। অন্যদিকে, শহরাঞ্চলে স্ট্যাম্প ডিউটির হার ৭ শতাংশ থেকে কমে ৬ শতাংশ করা হল।
চা বাগানের ক্ষেত্রে কৃষি আয়করে সম্পূর্ণ কর ছাড় ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী। রাজ্যের দাবি, ২৫ লক্ষ চা বাগান শ্রমিক উপকৃত হবেন। এছাড়া, কৃষির জন্য কৃষি জমি কিনলে লাগবে না মিউটেশন ফি। কৃষকদের জন্য ১০০ কোটির বিশেষ তহবিল গড়ার ঘোষণা ছাড়াও কৃষকদের বার্ধক্য ভাতা ৭৫০ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করেছে রাজ্য।
বার্ধক্য ভাতা প্রাপকের সংখ্যা ৬৬ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লক্ষ বলে জানালেন অমিত মিত্র। পাশাপাশি বরাদ্দ বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে। এবারের বাজেটে কন্যাশ্রীর বার্ষিক ভাতাও বৃদ্ধি করেছে রাজ্য। এদিনের বাজেটে প্রতিবন্ধীদের জন্য নতুন পেনশন প্রকল্প ‘মানবিক’ ঘোষণা করেছে রাজ্য।
ছাত্রীদের বার্ষিক বৃত্তির পরিমাণ ৭৫০ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। তবে, এবারের রাজ্য বাজেটে সেরা চমক ‘রূপশ্রী’ প্রকল্প, যার মূল লক্ষ্য নাবালিকা বিয়ে রোখা। এর আওতায় বার্ষিক আয় দেড় লক্ষ টাকা আয়ের কম, এমন পরিবারের ক্ষেত্রে মেয়েদের বিয়ে ১৮ বছরের পরে হলে এককালীন ২৫ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য এক হাজার পাঁচশো কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য।
এছাড়া, সংখ্যালঘু, মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য বরাদ্দ ৩৭১৬.২২ কোটি টাকা, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের জন্য বরাদ্দ ৬৪০.৪৮ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা, কলকাতায় এবছর নামবে ৪০টি ইলেকট্রিক বাস।
এদিন বাজেট পেশের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এবছর সাধারণ মানুষের বোঝা না বাড়িয়ে রাজ্য বাজেট পেশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, নোটবন্দি, জিএসটির প্রভাব পড়েছে কৃষিক্ষেত্রে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে হস্তক্ষেপ করুক কেন্দ্র, বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, গত ৬ বছরে ৮১ লক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে রাজ্যে। রাজ্যের ৯০ শতাংশ মানুষকে ২ টাকা কিলো দরে চাল দিয়েছে তাঁর সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কন্যাশ্রীর মতোই রূপশ্রীও আমাদের গর্ব। গ্রামই আমাদের সম্পদ।’ তিনি জানান, বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে কৃষকদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। তিনি যোগ করেন, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প আরও সক্রিয় করায় বাড়তি নজর দিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। এর আওতায় রাজারহাটে সিলিকন ভ্যালি এশিয়া গড়ে তোলা হবে বলেও জানান তিনি।