কলকাতা: পিএইচডি ছাড়াই সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ করতে চায় রাজ্য সরকার। অনুমোদন পেতে চিঠি দেওয়া হচ্ছে ইউজিসিকে। এছাড়া, অধ্যক্ষদের প্রশাসনিক ক্ষমতা ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কথাও ভাবছে সরকার।


 

রাজ্য জুড়ে অধ্যক্ষের আকাল। রাজ্যের ৪৪টি সরকারি কলেজের মধ্যে ৪১টিতেই অধ্যক্ষ নেই। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে কাজ চলছে। খোদ শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, দু’-দু’ বার বিজ্ঞাপন দিয়েও অনেক সরকারি কলেজের জন্য অধ্যক্ষ পাওয়া যাচ্ছে না। এই সঙ্কট মেটাতে তিন রকমের দাওয়াই দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। অধ্যক্ষদের প্রশাসনিক ক্ষমতাবৃদ্ধি, আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং পিএইচ ডি ছাড়াই অধ্যক্ষ নিয়োগ।

 

বৃহস্পতিবার বিধানসভায় তাঁর ঘরে, শিক্ষামন্ত্রী জানান, অধ্যক্ষের আকাল মেটাতে তাঁদের হাতে আরও বেশি করে প্রশাসনিক ক্ষমতা তুলে দেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। তাঁদের যাতে আরও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায়, সে কথাও ভাবা হচ্ছে। পাশাপাশি, পিএইডি ছাড়াই যাতে কাউকে অধ্যক্ষ পদে বসানো যায়, তার অনুমোদনের জন্য ইউজিসির কাছে চিঠি লেখা হবে।

 

৪২টি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের ফাঁকা পদের জন্য দু’বার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। মাত্র ২৭টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। নিয়োগ এখনও শুরু করা যায়নি। কিন্তু অধ্যক্ষ পদের জন্য এমন অনীহা কেন?  শিক্ষামহলের একাংশের বক্তব্য, আর্থিক সুযোগ-সুবিধা তো অবশ্যই একটি কারণ। কলেজের অধ্যক্ষ হতে মূল যে যোগ্যতা প্রয়োজন, তা হল, অ্যাকাডেমিক পারফরমেন্স ইন্ডিকেটরে ৪০০ পয়েন্ট পেতে হয়। এছাড়া, পনেরো বছর কলেজে পড়ানোর অভিজ্ঞতা এবং পিএইচডি ডিগ্রি। কিন্তু, দায়িত্ব বাড়লেও বেতন ও ভাতা বাড়ে সামান্য। সমযোগ্যতার একজন অধ্যপকের সঙ্গে একজন অধ্যক্ষের বেতন-ভাতার ফারাক হয় মাত্র চার হাজার টাকার। এই ক’টা টাকার জন্য আর কেন অধ্যক্ষের ঝক্কি সামলানো, মন্তব্য অধ্যাপকদের একাংশের।

 

বিরোধীদের অবশ্য দাবি, আর্থিক সুযোগ-সুবিধার থেকেও, অধ্যক্ষ হওয়ার অনীহার পিছনে সবথেকে বড় কারণ ক্যাম্পাসে-ক্যাম্পাসে অশান্তি। একজন অধ্যক্ষ, এমনিতে পদাধিকার বলেই কলেজের পরিচালন সমিতির সম্পাদক পদে বসেন। কিন্তু, পদে থাকলেও, রাজনৈতিক চাপে তাঁর সেভাবে কিছু করার ক্ষমতা থাকে না বলেই অভিযোগ।

 

এই, পরিস্থিতিতে, অধ্যক্ষ-সঙ্কটে পড়ে এবার তাঁদের হাতে আরও বেশি প্রশাসনিক ক্ষমতা তুলে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার।