কলকাতা:  বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা এসইজেড-এর তকমা ছাড়াই রাজ্যে বিনিয়োগ করতে আসছে ইনফোসিস। এসইজেড-এর সমতুল অন্য সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে ইনফোসিসকে। নবান্নে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের তথ্য প্রযুক্তি শিল্পের আকাশে রুপোলি রেখা। মঙ্গলবার, মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে জানান, এসইজেড-এর তকমা ছাড়াই রাজ্যে বিনিয়োগ করতে আসছে ইনফোসিস। সংস্থার পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে এ কথা জানানো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ৫০ একর জমিতে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এতে প্রায় ১ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হবে। মুখ্যমন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন, এসইজেড-এর তকমা দেওয়া না হলেও সমতুল অন্য সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে ইনফোসিসকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা প্রায় এক যুগের টানাপোড়েনের অবসান। শুরুটা হয়েছিল বারো বছর আগে। ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে কলকাতায় এসে রাজ্যে ৫০০ কোটি টাকা লগ্নি করে নতুন ক্যাম্পাস খোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা কর্ণধার এন আর নারায়ণমূর্তি।
প্রথমে ১০০ একর জমি নেওয়ার কথা থাকলেও ২০১০ সালের শেষে ৭৫ কোটি টাকার বিনিময়ে ৫০ একর জমি নেয় তারা। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর এসইজেড তকমা দেওয়া নিয়ে শুরু হয় টানাপড়েন। তৃণমূল সরকার নীতিগত ভাবে এসইজেড-এর বিরোধী। পাল্টা ইনফোসিসও জানিয়ে দেয়, এসইজেড ছাড়া তাদের পক্ষে কাজ শুরু সম্ভব নয়।
কর্পোরেট কর, আমদানি শুল্ক, পরিষেবা কর, উৎপাদন শুল্ক, কেন্দ্রীয় বিক্রয় করে ছাড়ই এসইজেড-এ ব্যবসা করার প্রধান আকর্ষণ। আর সেই সব সুবিধা ছাড়া আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন।
এই জট কাটাতে ইনফোসিসের সঙ্গে একাধিক বার কথা বলেন তৎকালীন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু, সমস্যা মেটেনি। অবশেষে প্রায় এক যুগ পর, ২০১৭-য় গলল বরফ। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, রাজ্যে লগ্নি করতে আসছে ইনফোসিস।
সূত্রের খবর, ইনফোসিসকে যে সব সুযোগ-সুবিধা রাজ্য সরকার দেবে বলেছে, সেই একই সুযোগ-সুবিধা তারা উইপ্রোকেও দিতে রাজি। এ নিয়ে উইপ্রোর সঙ্গে আলোচনাও চলছে।
প্রসঙ্গত, রাজারহাটে উইপ্রোর প্রস্তাবিত দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রকল্পও সেজ-জটিলতার জেরে দীর্ঘদিন ধরে থমকে।