কলকাতা: সিন্ডিকেটের ছত্রছায়াতেই কি পোস্তার উড়ালপুল নির্মাণের কাজ চলছিল? পোস্তায় নির্মীয়মাণ বিবেকানন্দ উড়ালপুলে কি থাবা বসিয়েছিল সিন্ডিকেট-চক্র? পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে এরকমই চাঞ্চল্যকর তথ্য।

লালবাজার সূত্রে দাবি, এসব সিন্ডিকেটের সঙ্গে তৃণমূল নেতা সঞ্জয় বক্সীর ভাইপো রজত বক্সীর যোগও মিলেছে।

তদন্তকারীদের দাবি, উড়ালপুল নির্মাণকারী সংস্থা আইভিআরসিএল-এর ধৃত আধিকারিকরা জানিয়েছেন, উড়ালপুলের জন্য সিমেন্ট, বালি, স্টোন চিপসের মিশ্রণ বা রেডি মিক্স আসত তাদের নোনাডাঙার ব্যাচিং প্লান্ট থেকে।

ইতিমধ্যে কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশ এই ব্যাচিং প্লান্টে তল্লাশি চালিয়েছে। সেখান থেকেই মিলেছে উড়ালপুলকাণ্ডে সিন্ডিকেট-যোগের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

পুলিশ সূত্রে দাবি, এই প্লান্টে সিমেন্ট, বালি, স্টোন চিপস সবই সরবরাহ করত এলাকার প্রায় সাত-আটটি সিন্ডিকেট। ব্যাচিং প্লান্ট থেকে সেই সিন্ডিকেটের রসিদও পাওয়া গিয়েছে। স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটের সদস্য একথা স্বীকারও করে নিয়েছেন।

সিন্ডিকেটের সঙ্গে আবার নাম জড়িয়ে গিয়েছে গিরিশ পার্কের দাপুটে তৃণমূল নেতা সঞ্জয় বক্সীর ভাইপো রজত বক্সীরও। পুলিশ সূত্রে দাবি, আইভিআরসিএল-এর ব্যাচিং প্লান্ট থেকে রজত বক্সী এবং তাঁর স্ত্রীর পাপিয়া বক্সীর নাম লেখা প্রচুর রসিদও উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, শুধু শ্রমিক নয়, বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুলে কয়েক লক্ষ টাকার বালি সরবরাহ করেছেন রজত বক্সী।

এই তথ্য সামনে আসার পরই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, উড়ালপুল ভেঙে পড়ার নেপথ্যে সিন্ডিকেট চক্রের যোগও একটা কারণ নয় তো? সিন্ডিকেটগুলি যে কাঁচামাল সরবরাহ করেছিল, তার গুণগত মান আদৌ ভাল ছিল তো?

ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশ রেডিমিক্স প্লান্ট থেকে সংগৃহীত নমুনা ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। তবে ফরেনসিক পরীক্ষায় যদি কাঁচামালের গুণগত মান খারাপ বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে কেএমডিএ কি সেই দায় এড়াতে পারে? বিরোধীদের প্রশ্ন, উড়ালপুলের নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্বে তো ছিল রাজ্য সরকারেরই অধীনস্থ সংস্থা কেএমডিএ। তারা কি এতদিন ঘুমোচ্ছিল?