কলকাতা: ক্যাম্পাসে বিজেপির দাদাগিরির অভিযোগ তুলে শনিবার রাজপথে নেমেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। এই মিছিলের পাল্টা হিসেবে সোমবার কর্মসূচি ঘোষণা করল আরএসএসের ছাত্র সংগঠন ‘অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ’।
জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর তিনটেয় গোলপার্ক থেকে মিছিল শুরু করবে তারা। মিছিল যাবে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ৮বি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত। যদিও এবিভিপির মিছিলের দিন-বাছাই ঘিরে নানা মহলে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক জানিয়েছেন, সোমবার বি টেকের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা রয়েছে। পরীক্ষা হবে সকাল ১১ থেকে দুটো এবং আড়াইটে থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত। সকাল ১১ টা থেকে শুরু হবে স্নাতক স্তরের বিজ্ঞান শাখার সব বিষয়ের সেমেস্টার পরীক্ষা। পাশাপাশি স্নাতকোত্তরে ইংরেজি ও সংস্কৃতর প্রবেশিকা পরীক্ষাও রয়েছে সোমবার।




এই প্রসঙ্গে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেছেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশে যে কেউ মিছিল করতেই পারে। তবে আবেদন করছি, যাতে পঠনপাঠন ও পরীক্ষায় যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে দিকে নজর রাখার। এবিভিপির মিছিল ঘিরে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন যাদবপুরের অধ্যাপকরাও। যদিও এবিভিপির সাফাই, তাদের মিছিলের কোনও প্রভাব যাদবপুর ক্যাম্পাসে পড়বে না! অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের রাজ্য সম্পাদক সুবীর হালদার আশ্বাস দেন, পরীক্ষায় কোনও ব্যাঘাত ঘটবে না।।
এবিভিপি নেতৃত্ব এই দাবি করলেও, বিজেপি নেতাদের বক্তব্যে আশঙ্কার মেঘ দেখছে শিক্ষামহলের একাংশ। কাল তারা মিছিল করবে। আমরা দেখব। আমরা অংশ নেব না, তবে দেখব, কী ঘটছে। অনেকেই কটাক্ষ করে বলছেন, বিজেপি নেতারা কি আর বাইরে থেকে কিছু দেখতে পারেন! সে কারণেই তো শুক্রবার রাতে যখন ধুন্ধুমার যাদবপুর ক্যাম্পাস, তখন সেখানেই কার্যত রণমূর্তি ধারণ করেছিলেন দেবশ্রী চৌধুরীর মতো বিজেপি নেত্রীকে!
ঝামেলার খবর পেয়েই সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে ক্যাম্পাসে চলে গিয়েছিলেন হাওড়া উত্তরের বিজেপি প্রার্থী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়! উপাচার্যের সঙ্গে বিজেপির কাউন্সিলর তিস্তা বিশ্বাসের স্বামীর ছবিও ক্যামেরাবন্দি হয়েছিল। বিজেপি নেতৃত্বের এই তৎপরতায় সেদিন আরও উত্তপ্ত হয়েছিল পরিস্থিতি।
ঝামেলার শুরু থেকে ক্যাম্পাসে দেখা গিয়েছিল বঙ্গবাসী মর্নিং কলেজের অধ্যাপক দেবাশিস চৌধুরীকে। অনেকেরই প্রশ্ন, সিনেমা প্রদর্শন ঘিরে ঝামেলার সময় বঙ্গবাসী কলেজের অধ্যাপক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কী করছিলেন? কেন তাঁর অন্য ক্যাম্পাসে যাওয়ার প্রয়োজন হল?
বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য দেবাশিস চৌধুরীর পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়েছে, বঙ্গবাসীর ওই অধ্যাপক এবিভিপির অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন! রবিবার এ নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, দেবাশিস চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।