কলকাতায় এসে একের পর এক কর্মসূচিতে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি। বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টের কিছুক্ষণ পরে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে নিয়ে গিরিশ মুখার্জি রোডে পৌঁছন নাড্ডা। গাড়ি থেকে নেমে গিরিশ মুখার্জি রোড সংলগ্ন ঝুপড়ি এলাকায় ঢোকেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি। গিরিশ মুখার্জি রোডের ৩৭/১ লেনের সাতটি বাড়ি আগে থেকেই গৃহসম্পর্ক অভিযানের জন্য চিহ্নিত করে রেখেছিল বিজেপি। কিন্তু নাড্ডা সেখানে পৌঁছতেই হুলুস্থুল পড়ে যায়। বিজেপি-র যা পরিকল্পনা ছিল, সেটা হয়নি। কারণ নিরাপত্তাজনিত সমস্যা তৈরি হয়। যার জেরে দু’টি বাড়িতে জনসংযোগ সেরেই ফিরে যান নাড্ডা। এখান থেকে তিনি চলে যান ভাষা পরিষদে।
বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে না পেরে হতাশ স্থানীয় বাসিন্দারা। গিরিশ মুখার্জী রোডের বাসিন্দা মিঠু মণ্ডল বলেন, ‘এত ভিড় যে আমরা কিছু বলতেই পারলাম না, এই কাগজটা শুধু দিল।’
স্থানীয় গৃহবধূ মৌমিতা জানা বললেন, ‘বাড়িটার অবস্থা জানিয়েছি। লকডাউনে স্বামীর কাজ গেছে, সেটা বলেছি। নাড্ডা দেখছেন বলছেন।’
এই পাড়ারই বাসিন্দা ৮৪ বছরের শম্ভুনাথ দত্ত। উত্তম কুমারের পাড়ার ছেলে। বিজেপি কর্মীদের কথা শুনে সকাল থেকে নাড্ডার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। কিন্তু বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি তাঁর বাড়ি অবধি পৌঁছননি। এই বৃদ্ধ জানালেন, ‘উনি এলে বলতাম, বিজেপি যেন মাথায় রাখে দলের ঊর্ধ্বে দেশ।’
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা আবার বিজেপি সভাপতির সঙ্গে দেখা না করতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
যদিও, নাড্ডার লাগাতার কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল।
ভবানীপুর মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী কেন্দ্র। ২০১১-তে রাজ্যে পালাবদলের পর ভবানীপুর থেকেই জিতে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১-র উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে ৫৪ হাজার ২১৩ ভোটে জয়ী হন তৃণমূল নেত্রী। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর, ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল নেত্রীর জয়ের ব্যবধান ছিল ২৫ হাজার ৩০১। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের প্রেক্ষাপটে ৬০ শতাংশ অবাঙালি অধ্যুষিত ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির ভোট উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে। যা অস্বস্তিতে রেখেছে তৃণমূলকে। আর সেই কেন্দ্রে গিয়ে বঙ্গ বিজেপির গৃহসম্পর্ক অভিযানের সূচনা করেন নাড্ডা। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।