কলকাতা: পরীক্ষা চালাকালীনই, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু। হস্টেলের ঘরে, কানে হেডফোন লাগানো অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। পরিকল্পিত খুন, দাবি পরিবারের।
কম্পিউটার সায়েন্সের রৌনক সাহার পর দর্শনের সৌমিত্র দে। এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও এক মেধাবি ছাত্রের রহস্যমৃত্যু! ক্যাম্পাসের মধ্যে উদ্ধার হল ঝুলন্ত দেহ! কানে হেডফোন। দেহ ঝুলছে সিলিং ফ্যানে!
বেলুড় বিদ্যামন্দির থেকে স্নাতক। প্রত্যন্ত বাঁকুড়ার জয়পুর থেকে যাদবপুরে পড়তে এসেছিলেন সৌমিত্র। থাকতেন মেন হস্টেলের বি ব্লকের দোতলার এই ঘরে। রবিবার সকাল এগারোটা নাগাদ বন্ধুরা খাওয়ার জন্য ডাকতে গিয়েছিলেন, কিন্তু সাড়া মেলেনি। সহপাঠীদের দাবি, দরজা ভাঙতেই দেখা যায়, গলায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায়, সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে সৌমিত্রর দেহ!
পুলিশ সূত্রে খবর, দেহ উদ্ধারের সময়, সৌমিত্রর হস্টেলের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। তাঁর রুমমেট বাড়ি গিয়েছেন। ফলে, তদন্তকারীরা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন, হয়তো আত্মহত্যা করেছেন দর্শনের দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্র। যদিও ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি।
বিকেলেই কলকাতায় চলে আসে মৃত ছাত্রের পরিবার। মৃত ছাত্রের বাবা লক্ষ্মণ দে জানিয়েছেন, এটা কোনওভাবেই আত্মহত্যা নয়। তিনি বলেন, আগেরদিন রাতেও স্বাভাবিক কথাবার্তা হয়েছে। মানসিক অবসাদগ্রস্তও ছিল না। আত্মহত্যা কোনওভাবেই মানতে পারছি না। মৃত ছাত্রের দাদা শ্রীমন্ত দে-র দাবি ভাইকে পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছে।
প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও, সহপাঠীদের একাংশের দাবি, এক তরুণীর সঙ্গে সৌমিত্রর প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। নানা বিষয় নিয়ে সম্প্রতি দু’জনের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। তাহলে কি রহস্যমৃত্যুর নেপথ্যে এটাও কোনও কারণ?
গত চব্বিশে নভেম্বর দক্ষিণ বন্দরের পানিঘাটে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে, তলিয়ে যান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালেরই কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র রৌনক সাহা। পরিবার অভিযোগ তোলে, রৌনককে ধাক্কা দিয়ে জলে ফেলে দিয়েছিল এক বন্ধু। এদিন সেই প্রসঙ্গ তুলেছে সৌমিত্রর পরিবারও।
পুলিশ সূত্রে খবর, দেহ উদ্ধারের সময় সৌমিত্রর কানে হেডফোন লাগানো ছিল। তাহলে কি ওই সময় কারও সঙ্গে বলছিলেন সৌমিত্র? কথা বলতে বলতে শেষ? নাকি গান শুনতে শুনতে?
মৃত্যুরহস্য ভেদ করতে, মোবাইল ফোনের কলসিস্ট খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।