কলকাতা: স্কুল-কলেজের গণ্ডী ছাড়িয়ে কন্যাশ্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেছেন আগেই। এবার সেই প্রকল্পকে জনপ্রিয় করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাষ্ট্রপুঞ্জে পুরস্কৃত হয়েছে রাজ্যের কন্যাশ্রী প্রকল্প। সেই উপলক্ষ্যে শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় বিশেষ অনষ্ঠানের। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, স্নাতকস্তরে বিজ্ঞান ও কলা বিভাগে যাঁরা ৪৫ শতাংশ নম্বর পাবেন, তাঁরা স্নাতকোত্তরে পড়াশোনার জন্য পাবেন বিশেষ ভাতা। বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়ারা পাবেন মাসিক আড়াই হাজার এবং কলা বিভাগের পড়ুয়ারা মাসে ২ হাজার টাকা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যাঁরা মেধাবি তাঁরা গবেষণা করতে চাইলেও ভাতা পাবেন। ১০ ছাত্রীকে ভাতা দেবেন অনাবাসী ভারতীয়রা।
দরিদ্র ছাত্রছাত্রীরা যাতে হতাশাগ্রস্ত না হয়ে পড়ে, সে কথা বলার পাশাপাশি, নিজের জীবনের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, গরিব হওয়াটা অপরাধ নয়। কর্মটাই আসল। আমার বই ছিল না। খাতায় লিখে আনতাম। গরিবিকে জয় করতে হবে। এদিনও নাম না করে বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, রবীন্দ্র-নজরুলকে ভুলবেন না। শ্লীকৃষ্ণের চক্র মানবতার জন্য ঘোরে। ভাগাভাগির জন্য ঘোরে না। আমি জীবনের জয়গান গাই।
জনপরিষেবায় বিশেষ কৃতিত্বের জন্য রাজ্যের কন্যাশ্রী প্রকল্প পেয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা, ‘ইউ এন পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড’। তাই কেন্দ্র এবং অন্য রাজ্যগুলিতেও এই প্রকল্প চালু করা উচিত। শুক্রবার লোকসভায় একথা বলেন তৃণমূল সাংসদ মৃগাঙ্ক মাহাতো।
ইতিমধ্যেই কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় এসেছে প্রায় ৪১ লক্ষ ছাত্রী। সরকারের দাবি, এই প্রকল্পের ফলে স্কুলছুটের সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে বাল্যবিবাহ। এবার বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে কন্যাশ্রী ভাতা চালু হওয়ায় বহু গরিব ছাত্রীর উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ হবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।