কলকাতা: টুইটারে শিবরাত্রি সংক্রান্ত একটি বিতর্কিত ছবি পোস্ট করায় অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়ের এফআইআর ভাল চোখে দেখছেন না রাজ্যের বিদ্বজ্জনরা। নাট্য ব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন অভিযোগ করেছেন, সায়নী বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বলে তাঁকে টার্গেট করেছে বিজেপি। রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত আবার বলেছেন, তথাগত রায় প্রাক্তন রাজ্যপাল, তাঁর এত তুচ্ছ বিষয়ে মাথা ঘামানো ঠিক নয়।

২০১৫ সালে করা একটি টুইটের জেরে সায়নীর বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল। আজ তিনি বলেন, আমার বক্তব্য খুব সরল, উনি আমার ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করেছেন। ২৯৫এ ধারায় তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আইন বলে, ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করা হলে পুলিশে নালিশ করা উচিত, আমি তাই করেছি। সায়নী তাঁর টুইট ৫ বছর আগে করেছেন না এখন করেছেন, তা পুলিশকে বলবেন। ২৯৫ এ ধারাটা দেশের আইন, সেটা ভাল করে পড়ে দেখা উচিত। দেশের আইন বড় না মত প্রকাশের স্বাধীনতা বড় সেটা ভেবে দেখতে হবে। ২৯৫ এ আইন সংসদে পাশ হয়েছে। নিজের মত ব্যাখ্যা করে বললে হবে না।

সায়নীকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমি আইন মেনে চলা নাগরিক, আইন নিজের মত চলবে। তাঁর দাবি, ৬ বছর আগের টুইট নিয়ে জলঘোলা হচ্ছে। এটা হল বিরুদ্ধ মতকে চেপে দেওয়ার চেষ্টা। এভাবে রাজ্যের মানুষকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থেকে আটকানো যাবে না। ঈশ্বর তো বটেই, রাজ্যবাসীও এর বিচার করবেন।

এ নিয়ে মুখ খুলেছেন নাট্য ব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন। তিনি বলেন, ২০১৫ সালের টুইট নিয়ে এখন হইচই করা হচ্ছে কারণ সায়নী বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। ব্যক্তিগতভাবে সায়নীর টুইট তাঁর রুচিকর লাগেনি ঠিকই কিন্তু ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগলে ৬ বছর আগেই অভিযোগ করা উচিত ছিল। আজ যে সময়ে তা করা হচ্ছে, তাতে পরিষ্কার বোঝা যচ্ছে, ধর্মীয় ভাবাবেগ আসল কারণ নয়, বিজেপির বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলুক এটা তাদের সহ্য হচ্ছে না।

কৌশিক আরও বলেছেন, অসহিষ্ণুতার ব্যাপারে দিলীপ ঘোষ বা তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত তথাগত রায়ের অমিল নেই, দুজনেই ল্যাজে পা পড়লে ফোঁস করেন। সব রাজনৈতিক দলের এটাই চরিত্র, বিজেপির আরও বেশি। কিছু অপছন্দ হলেই তারা দেশ বিরোধী, হিন্দু ধর্ম বিরোধী আখ্যা দেয়।

বর্ষীয়াণ নাট্য ব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেছেন, সায়নী সাধারণ নাগরিক আর তথাগতবাবু প্রাক্তন রাজ্যপাল। এমন তুচ্ছ বিষয়ে তাঁর মত মানুষের মাথা না ঘামানো উচিত ছিল। কোন জিনিসটা গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন তা আগে ঠিক করে মন্তব্য করা উচিত।

শুধু তথাগত নন, অসমের এক বাসিন্দাও তাঁর ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত লাগার কারণে সায়নীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে চলেছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলা হিন্দু জাগরণ মঞ্চও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছে।