কলকাতা: তৃণমূল পরিচালিত আসানসোল পুরসভার আপত্তি খারিজ করে বাবুল সুপ্রিয়র সাংসদ মেলার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে পুরসভাকে তীব্র ভৎর্সনাও করেছে বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি শঙ্কর আচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ। যদিও, মেলায় সঙ্গীতানুষ্ঠান করা যাবে না।

বৃহস্পতিবার শুনানির শুরুতেই বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, ভিড় হবে আশঙ্কা করেই কি মেয়র মেলার অনুমতি বাতিল করেছেন? ভিড় নিয়ন্ত্রণ কি পুরসভার কাজ? আপনারা বলছেন, গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে পুলিশকর্মীরা ব্যস্ত। গত কয়েকদিনে যে সমস্ত মেলা হয়েছে, আমি কী একঘণ্টার মধ্যে ডিজিকে তার রিপোর্ট জমা দিতে বলব?

তৃণমূল পরিচালিত আসানসোল পুরসভার তরফে এদিন আদালতে জানানো হয়, মেলায় আধার কার্ডের স্টল নিয়ে তাদের আপত্তি আছে। কারণ, আধার কার্ডের স্টল হলে সেখানে প্রচুর ভিড় হতে পারে। সেক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা নষ্ট হতে পারে।

একথা শুনেই বিচারপতিরা বলেন, তাহলে পুরসভা স্বীকার করে নিচ্ছে, তাদের এলাকায় সবাই আধার কার্ড পায়নি। তাই মেলায় কেন্দ্রীয় সরকারের আধার কার্ডের স্টলে আপনারা ভিড়ের আশঙ্কা করছেন। কিন্তু, আধার কার্ড তো প্রত্যেকের অধিকার। যদি জনস্বার্থে কেউ এর ব্যবস্থা করে, তাহলে আপনাদের অসুবিধা কোথায়?

এরপর পুরসভার বাকি যুক্তিও একে একে খণ্ডন করেন বিচারপতিরা। পর্যবেক্ষণে তাঁরা বলেন, মেয়রের যুক্তি অবিশ্বাস্য। কোনও সচেতন বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ একে সমর্থন করতে পারেন না। আপনারা বলছেন, মেলার সীমানা দেওয়া নিয়ে সমস্যা রয়েছে। গত একবছরে এর কারণে কতগুলি মেলা বাতিল হয়েছে, তার রিপোর্টে চেয়ে পাঠাব?

এরপরই আদালত নির্দেশ দেয়, সাংসদ মেলা যেখানে হওয়ার কথা ছিল, সেখানেই হবে। তবে মেলার ছাড়পত্র দিলেও কোনও সাংস্কৃতিক বা সঙ্গীতানুষ্ঠান করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

আদালতের এই রায়কে নিজেদের জয় হিসেবে দাবি করেছেন তৃণমূল পরিচালিত আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি এবং বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় দু’জনই।

সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটকে মেলার নিরাপত্তায় পুলিশকর্মী মোতায়েন করতে হবে। অতিরিক্ত জনসমাগম দেখলে পুরসভা পুলিশে খবর দেবে। পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। একান্ত প্রয়োজন হলে মেলা চলাকালীন কোনও স্টল বা মেলা বন্ধের সিদ্ধান্তও নেওয়া যেতে পারে।