কলকাতা: খাস কলকাতার স্কুলে শিক্ষকদের একাংশকে জঙ্গি তকমা দিয়ে চিঠি। কারও বিরুদ্ধে আবার মুখ্যমন্ত্রীকে হত্যার চক্রান্তের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আতঙ্কে খিদিরপুর অ্যাকাডেমির শিক্ষক-শিক্ষিকারা। নেপথ্যে স্কুলের কেউ? তদন্তে পুলিশ। কে বা কারা এমন চিঠি পাঠাচ্ছে, শিক্ষকরা চাইছেন, দ্রুত তাদের ধরা হোক।
সম্প্রতি বাংলায় মাদ্রাসাকে ব্যবহার করে জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়ার মতো চাঞ্চল্যকর দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, যা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। এবার খাস কলকাতার খিদিরপুর অ্যাকাডেমির শিক্ষকদের একাংশকে জঙ্গি তকমা দিয়ে চিঠি পাঠানোর ঘটনা সামনে এল। চিঠিতে কাউকে বলা হচ্ছে দেশবিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত। কেউ না কি আবার আরএসএসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে হত্যার ছক কষছেন! কাউকে দায়ী করা হয়েছে আর্থিক তছরুপের অভিযোগে। কাউকে আবার জন্তু-জানোয়ারের ছবিতে তাঁদের সংক্ষিপ্ত নাম লিখে পাঠানো হয়েছে।
অ্যাকাডেমির শিক্ষকদের অভিযোগ, গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরে তাঁদের নামে এমনই সব চিঠি এসে পৌঁছচ্ছে। সম্প্রতি সংখ্যাটা মাত্রা ছাড়িয়েছে। শিক্ষকদের নামে চিঠি পৌঁছে যাচ্ছে নবান্নতেও। এতে রীতিমতো আতঙ্কে তাঁরা। শেখ মহম্মদ সালেহিন নামে এক শিক্ষক বলেছেন, আমার নামে বলা হচ্ছে আমি দেশবিরোধী কাজে জড়িত, বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, বন্দর এলাকা থেকে যুবকদের বাংলাদেশে নিয়ে যাচ্ছি। মাঝে মাঝে স্কুলে পুলিশ চলে আসছে, হাজিরা দিতে হচ্ছে। আতঙ্কে অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আরেক শিক্ষক ঋতুপর্ণ বসুর দাবি, বলা হচ্ছে, তিনি আরএসএসের সঙ্গে জড়িত, মুখ্যমন্ত্রীকে হত্যার ছক কষেছেন!
খিদিরপুরের স্কুলটিতে বর্তমানে ১৫ জন শিক্ষক, যাঁদের মধ্যে ১৩ জন ইতিমধ্যে এমন চিঠি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। ঘটনাটি নিয়ে ওয়াটগঞ্জ থানায় অভিযোগ করা হয়েছে স্কুলের তরফে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক শ্রীরূপগোপাল গোস্বামীর বক্তব্য, অনেক অভিযোগ কী আর বলব।
কিন্তু নির্দিষ্ট একটি স্কুলের এত শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ কেন? ঘটনার নেপথ্যে কি স্কুলেরই কারও হাত রয়েছে? খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।