কলকাতা:  বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষদের ডেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারির ৪৮ ঘণ্টা পরও চরম গাফিলতির অভিযোগ উঠল বাইপাসের ধারের এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। মুমূর্ষ রোগীকে টাকার জন্যে আটকে রেখে দেওয়ার অভিযোগ উঠল অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে। পরে এসএসকেএম-এ স্থানান্তরিত করার পর মৃত্যু রোগীর। ঘটনায় ফোন করে হাসপাতালের সিওও-কে কড়া হুঁশিয়ারি মদন মিত্রের।


আজ হাসপাতালের সিওওকে ফোন করে মদন বলেন, যেভাবেই হোক মৃত সঞ্জয় রায়ের পরিবারকে তাঁদের সমস্ত টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেভাবে বিনা চিকিত্সায় সঞ্জয়বাবুকে আটকে রেখে দিয়েছিলেন তা নিন্দনীয়। চার ঘণ্টা তাঁকে ওই অবস্থায় আটকে না রাখলে হয়তো তিনি আজ বেঁচে থাকতেন, বলেন মদন। অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে মদনের মন্তব্য, এবিষয়ে সরকার এবার যা পদক্ষেপ নেওয়ার নেবে। তাঁরা যেভাবে এখানে ব্যবসা চালাচ্ছেন, সেটা আসলে একটি শ্মশান তৈরির সমান। এভাবে মৃত্যুর কারবার তৈরি করার চেয়ে তাদের এখানে থেকে ব্যবসা গুটিয়ে চলে যেতে বলেন মদন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, যেভাবে অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ কথায় কথায় তাঁদের এখান থেকে হাসপাতালের ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেন, সেপ্রসঙ্গে মদনের মত, চাইলে এক্ষুনি চলে যেতে পারেন তাঁরা। মদনের চাঁচাছোলা আক্রমণ এই শ্মশানের চেয়ে কেওড়াতলা শ্মশান অনেক ভাল।

অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মদনের কথা, কী বললেন তিনি শুনুন

প্রসঙ্গত, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ডানকুনির বাসিন্দা সঞ্জয় রায়। অভিযোগ,  অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, সিটি স্ক্যানের নাম করে তাঁকে রাখা হয় ভেন্টিলেশনে। পরিবারের দাবি, ৬ দিনে ৭ লক্ষ ৪১ হাজার টাকার বিল হয়। বিল বেড়ে যাওয়ায়, রোগীকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তির জন্য তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে আবেদন জানায় পরিবার। শয্যাও পেয়ে যায়। অভিযোগ, তারপরেও অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ পুরো টাকা না মেটানো পর্যন্ত রোগীকে ছাড়তে রাজি হয়নি তারা। এমনকি তারা বলে ফিক্সড ডিপোজিট, বাড়ির দলিল, চেক দরকার হলে গায়ের গয়নাও রেখে যেতে হবে তাঁদের।

সঞ্জয়ের বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, শিশুকন্যা ও বৃদ্ধ বাবা-মা। পরিবারে একমাত্র রোজগেরে সঞ্জয়ের মৃত্যুতে গোটা পরিবারই অকূল পাথারে।

মদন মিত্র জানান, পরে অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ ফোন করে তাঁকে সমস্ত টাকা ফেরত্ দেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু টাকা ফিরিয়ে দিলেই পাপ ধোয়া যায় না, মন্তব্য মদনের। এই ঘটনার পর অ্যাপোলোর কাছে রিপোর্ট তলব করেছে স্বাস্থ্য দফতর।