কলকাতা: লাভ করুন, লোভ নয়। ইট-কাঠ বিক্রি করা আর জীবন বাঁচানো এক নয়। টাউন হলের বৈঠকে থেকে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে কড়া ভাষায় এই কথাটাই বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে এটাও পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন, এসব প্রতিষ্ঠানে সেবার নামে ব্যবসা চালানোর অভিযোগ তাঁর অজানা নেই।
বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অভিযোগ মোটামুটি একই। বুধবার আধিকারিকদের সামনেই তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ফাইল খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। এক এক করে জানাতে থাকেন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে ঠিক কী কী অভিযোগ রয়েছে--


১. একই ওষুধ বারবার দেওয়া।
২. বিল বাড়িয়ে দেখানো।
৩. স্বচ্ছতা ও সমন্বয়ের অভাব।


বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কীভাবে রোগীর পকেট ফাঁকা করে নিজেদের ক্যাশবাক্স ভরায়, সেই অভিযোগও পৌঁছেছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।



৪. অপ্রয়োজনে আইসিসিইউ-তে ভর্তি।
৫. অপ্রয়োজনে ভেন্টিলেশনে রাখা।
৬. কমিশনের জন্য পরীক্ষার নির্দেশ।


মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, শুধু রাজ্য নয়, ভিনদেশিদের কাছ থেকেও চড়া বিলের অভিযোগ পেয়েছেন তিনি।


৭. বাংলাদেশি রোগীদের থেকে বেশি চার্জ নেওয়া।


সাধারণ মানুষের অভিযোগ, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা না নিলেও এসব জায়গায় মানবিকতার ছিঁটেফোঁটা দেখা যায় না। অথচ, কাউকে কিছু বলার জো নেই। এদিন সেসব অভিযোগই এক এক করে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।


৮. কেস সামারি না দেওয়া
৯. বিল বাকি থাকলে দেহ আটকে রাখা
১০. চিকিৎসা খরচের এস্টিমেট না দেওয়া
১১. চিকিৎসকদের বেশি পরীক্ষার নির্দেশ দিতে বাধ্য করা।


এই প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে সরকারি চুক্তি না মানা সহ আরও একাধিক অভিযোগও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।


১৩. একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় আসছে না
১৪. সরকারের সঙ্গে চুক্তি অমান্য করে গরীবদের চিকিৎসা না করা
১৫. প্যাকেজের পরও অতিরিক্ত প্যাকেজ দেখিয়ে টাকা নেওয়া
১৬. জরুরি অবস্থা সত্বেও রোগী ফিরিয়ে দেওয়া


বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমের মর্জিমাফিক কাজকর্ম রুখতে এবার কড়া আইনও আনার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাধারণ মানুষের আশা, এরপর যদি অন্তত চিকিৎসা পরিষেবাটুকু সকলের সাধ্যের মধ্যে মেলে।