কলকাতা: তৃণমূল এবার একাই ২১১। কিন্তু, তার জেরে যাতে ঔদ্ধত্য দলের ঘাড়ে চেপে না বসে, সে বিষয়ে সতর্ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার, কালীঘাটে তৃণমূলের নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠকে, তাঁর স্পষ্ট বার্তা, জনপ্রতিনিধিদের কোনও রকম ঔদ্ধত্য দেখানো চলবে না। মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতে হবে। না হলে, ভবিষ্যতে তাঁদের টিকিট দেওয়া নিয়ে ভাবতে হবে।
সাংসদ অপরূপা পোদ্দারকে তাঁর আচরণের জন্য এ দিন ভর্ৎ‍সনা করেন তৃণমূলনেত্রী। সম্প্রতি, আরামবাগের সাংসদ এক শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। সেই রেশ ধরেই, এ দিনের বৈঠকে অপরূপার উদ্দশে তৃণমূলনেত্রী বলেন, তোমাকে কোথা থেকে তুলে এনে সাংসদ করেছি ভুলে গেছো? একজন সাংসদের উচিত, মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা। ঔদ্ধত্য প্রকাশ করা নয়। শেষবারের মতো বললাম।
এরপর ক্ষমা চেয়ে নেন তৃণমূল সাংসদ অপরূপা। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতেও এদিন ফের বার্তা দেন তৃণমূলনেত্রী। সূত্রের খবর, বৈঠকে তিনি বলেন, পুরনো কর্মীদের মর্যাদা দিতে হবে। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। দলীয় কমিটিতে ভারসাম্য রাখতে হবে। উত্তরবঙ্গে কোনও রকম গোষ্ঠীকোন্দল চলবে না।
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে বর্ধমানের গুসকরা পুরসভা পরিচালনায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। সমাধানসূত্র বের করতে অনুব্রত মণ্ডলকে দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে।
জনসংযোগ বাড়ানোর উপরও জোর দিয়েছেন মমতা। তাঁর বার্তা, ফোন বন্ধ রাখা চলবে না। নেতাদের অন্তত রাত এগারোটা পর্যন্ত ফোন খোলা রাখতে হবে। সাধারণ মানুষের ফোন ধরতে হবে।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ‘আমরা ২৩৫, ওরা ৩০’ - এই ঔদ্ধত্য দেখিয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর সরকারের কী অবস্থা হয়েছিল, তা রাজ্যবাসী দেখেছে। তৃণমূলের মধ্যেও যাতে সেই রোগ বাসা না বাঁধে তাই দলের নেতাদের আগাম সতর্ক করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।