কলকাতা ও নয়াদিল্লি: নোট বাতিলের জেরে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দেখতে নিজে পথে নেমেছেন। এবার মানুষের ভোগান্তির বিষয়ে সরাসরি রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চাইলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


নোট ইস্যুতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইকে রাইসিনার দরবারেও নিয়ে যাচ্ছেন মমতা। আর এব্যাপারে তিনি পাশে চান সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে। সূত্রের খবর, রবিবার সকালেই প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ফোন করেন মমতা। বলেন, নোট বাতিলের জেরে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এনিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে আপনার সঙ্গে দেখা করতে চাই।


এরপরই মমতা টুইটারে জানান, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে। তিনি লেখেন, রাষ্ট্রপতিকে ফোন করেছিলাম। নোট-সঙ্কটের জেরে মানুষের কীরকম ভোগান্তি হচ্ছে, তা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছি। ১৬ কিম্বা ১৭ তারিখ, রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ। ওইদিনই তাঁকে গোটা পরিস্থিতি সবিস্তারে জানানো হবে।


আরও পড়ুন:


নোট বাতিল: 'কালা' সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি, সিপিএম, কংগ্রেসকেও জোট বাঁধার ডাক মমতার


‘দেশ জুড়ে আর্থিক অরাজকতা চলছে...তিনি চলে গেলেন জাপান’, মোদীকে আক্রমণ মমতার


এখানেই থেমে থাকেননি মমতা। সূত্রের খবর, নোট সমস্যা নিয়ে লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গেও ফোনে কথা হয়েছে মমতার। সূত্রের খবর, সীতারাম ইয়েচুরিকেও এদিন ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, মোদী সরকারের নোট-বাতিল ইস্যুতে, আপনাদেরও তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করা উচিত।


[embed]https://twitter.com/MamataOfficial/status/797713307977166849[/embed]

[embed]https://twitter.com/MamataOfficial/status/797713448134012928[/embed]

জবাবে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক মমতাকে জানান, তিনি এখন তামিলনাড়ুতে আছেন, কাল দিল্লি ফেরার পর বিষয়টি দেখবেন।


সূত্রের খবর, সিপিএমের পাশাপাশি একই আর্জি জানিয়ে মমতা ফোন করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদবকে। বিকেলের দিকে তিনি এনিয়ে কথা বলেন রাহুল গাঁধী এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গেও।


দিল্লি যাওয়ার জন্য বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া সফর বাতিলও করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্ভবত ১৫ তারিখ বিকেলেই তিনি দিল্লি রওনা দেবেন।


আরও পড়ুন:


ধার করে ঠাকুরের মিষ্টি কিনেছি! কটাক্ষ মমতার, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি


প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পরই মোদী সরকারের সমালোচনা করেন মমতা। তাঁর মতে, কালো টাকা উদ্ধারের নামে সাধারণ মানুষের ওপর ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, নোট বাতিলের ফলে সাধারণ মানুষকে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।


গতকালই মমতা জানিয়েছিলেন, ‘জন-বিরোধী’ মোদী সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করতে প্রয়োজনে তিনি সিপিএম, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি সহ বিভিন্ন বিরোধী দলগুলির প্রতি আহ্বান করতেও রাজি।


 রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, একদিকে নোট ইস্যুকে হাতিয়ার করে মমতা যেমন মোদি সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন, অন্যদিকে সব দলকে পাশে টেনে বিজেপি-বিরোধী জোটের মঞ্চের ভিতও শক্তিশালী করতে চাইছেন।


সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধীদের এই এককাট্টা আক্রমণ বজায় থাকলে সেটা যে মোদি সরকারের পক্ষে যথেষ্ট অস্বস্তির কারণ হতে পারে।