কলকাতা: চিকিৎ‍সায় গাফিলতির জেরে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ। মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্টে চিকিৎ‍সক পূর্ণেন্দু রায়ের গাফিলতি প্রমাণিত। এক বছরের জন্য রেজিস্ট্রেশন বাতিল।
গল ব্লাডারে স্টোন অস্ত্রোপচার করাতে ২০১০ সালের ২১ মার্চ বাইপাসের ধারে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হন উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বাসিন্দা, বছর ৪৮-এর শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়। পরিবার সূত্রে দাবি, চিকিৎসক পূর্ণেন্দু রায় শর্মিষ্ঠার অস্ত্রোপচার করেন। অবস্থা স্থিতিশীল লিখে ২৫ মার্চ শর্মিষ্ঠাকে তিনি ছেড়ে দেন। কিন্তু, বাড়ি যাওয়ার পর থেকে তলপেটে ব্যথা শুরু হয়। ৪ এপ্রিল ফের ভর্তি করা হয় অ্যাপোলোয়।
পরিবারের দাবি, তখন পরীক্ষা করে দেখা যায় পিত্তনালীতে পাথর রয়েছে এবং অস্ত্রোপচারের সময় থেকেই শর্মিষ্ঠা জন্ডিসে আক্রান্ত। দিন দিন তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
শেষমেশ ২০১০ সালের ৭ মে তিনি মারা যান। পরিবারের দাবি, চিকিৎ‍সায় গাফিলতির জেরেই অকালে মারা যান শর্মিষ্ঠা।
স্বাস্থ্য ভবন, জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালত এবং রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে চিকিৎ‍সায় গাফিলতির অভিযোগ জানান শর্মিষ্ঠার স্বামী। পরিবারের দাবি, স্বাস্থ্য ভবনের তদন্তে চিকিৎ‍সক পূর্ণেন্দু রায়ের গাফিলতি প্রমাণিত হয়। জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতও চিকিৎ‍সায় গাফিলতির খুঁজে পায়।
কিন্তু, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকে ক্লিনচিট দিয়ে দেয়। একে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার দ্বারস্থ হন মৃত রোগীর স্বামী। তারা রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের উল্টো পথে হেঁটে চিকিৎসক পূর্ণেন্দু রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে এক বছরের জন্য তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিল। মৃতার মেয়ের দাবি, আজীবনের জন্য ব্যান করে দেওয়া উচিত।
শুধু এই নয়, মৃতের পরিবারের দাবি, ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, চিকিৎসায় গাফিলতির জন্য অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের চার লক্ষ টাকা দিলেও, চিকিৎ‍সক পূর্ণেন্দু রায় ১২ লক্ষ টাকা দেননি। এপ্রসঙ্গে, ক্রেতাসুরক্ষামন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, চার লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছি। বারো লক্ষ টাকা বলা হয়েছিল জমা রাখার জন্য। এমসিআইকে বলেছিলাম। চিকিৎ‍সক হিসেবে থাকতে পারবে না।
এ নিয়ে চিকিৎ‍সক পূর্ণেন্দু রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর বক্তব্য, বিষয়টি বিচারাধীন। কোনও মন্তব্য করবেন না।