কলকাতা: নারদের স্টিং অপারেশনকাণ্ডে দলীয় স্তরে তদন্ত হবে, দোষী হলে ব্যবস্থা, জানালেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একইসঙ্গে বিরোধী দলের নেতার নাম টেনে খাড়া করলেন চক্রান্তের তত্ত্বও। দলটাই দুর্নীতিগ্রস্ত, কে কার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে? কটাক্ষ বিরোধীদের।
সোমবার দ্বিতীয় দফার ভোট। তার ঠিক আগে , শনিবার, নারদ নিউজের স্টিং অপারেশনকাণ্ডে দলীয় স্তরে তদন্তের ঘোষণা করল তৃণমূল! শনিবার দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা ঘোষণা করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল মহাসচিবের এই দলীয় তদন্তের ঘোষণাকে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা! তাদের দাবি, গোটাটাই আসলে লোক দেখানো। কারণ, খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে অভিযুক্তদের পাশে পাশে দাঁড়াচ্ছেন, সেখানে দলীয় তদন্ত করে কী লাভ? প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর মতে, গোটা বিষয়টা হল ভোটের আগে ললিপপ দেওয়ার চেষ্টা।
বিরোধীদের এও প্রশ্ন, যেখানে তৃণমূলেরই শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশকে ফুটেজে দেখা গিয়েছে, সেখানে কি আর তৃণমূলের তদন্তে সত্যিটা কোনও দিন সামনে আসবে? বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, তৃণমূলের তো সবাই দোষী, কে তদন্ত করবে? সাহস থাকলে সিবিআই তদন্ত করাক। অন্যদিকে, সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, অভিযুক্তদের প্রার্থীপদ বাতিল করুক তৃণমূল। বিরোধীদের দাবি, তৃণমূলের তদন্তের অভিমুখ কোন দিকে যেতে পারে তার ইঙ্গিত মিলেছে দলের মহাসচিবের মন্তব্যে।

পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, সীতারাম ইয়েচুরি, আহমেদ পটেল ও সিদ্ধার্থনাথ সিংহের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত হবে। ভূমিকা প্রমাণিত হলে দল ব্যবস্থা নেবে। এখানেই বিরোধীদের প্রশ্ন, দলের বাইরের কারও বিরুদ্ধে তদন্ত করার এক্তিয়ার কি আদৌ তৃণমূলের রয়েছে? এই প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেন, আহমেদ পটেলের বিরুদ্ধে তদন্ত করার তৃণমূল কে?
বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছে, নারদকাণ্ডে তৃণমূল এতটাই অস্বস্তিতে, যে কখন কী বলবে, তাই বুঝে পাচ্ছে না। তাই এ দিন যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় দলীয় তদন্ত হবে বলে জানালেন, সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই কয়েক দিন আগে নারদকাণ্ডের তদন্তে ঘোর আপত্তি জানিয়েছিলেন! কেন দল তদন্ত চাইছে না প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, বিশ্বাসই করি না যেটা কেন তদন্ত চাইব? আমাদের নিজেদের প্রতি আস্থা আছে।
বাম-কংগ্রেস কিংবা নরেন্দ্র মোদী। তৃণমূল বিরোধিতায় সবারই প্রধান অস্ত্র--দুর্নীতি। বিরোধীদের দাবি, দুর্নীতির অভিযোগ, জনমানসেও যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে, তা হাড়ে হাড়ে বুঝছে কালীঘাট। আর তাতেই তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। একদিকে অভিযুক্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন দলনেত্রী। অন্যদিকে, মুখ বাঁচাতে, অভ্যন্তরীণ তদন্তের কথা বলছেন দলের মহাসচিব। কিন্তু, এ সব করে কি মানুষের চোখে ধুলো দেওয়া যাবে? প্রশ্ন বিরোধীদের!