পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: লুকোচুরি খেলছিল পাড়ার শিশুরা, সেই সময় খাবারের লোভ দেখিয়ে শিশুকে ডেকে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন। তারপর খুন। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে জোড়াবাগান কাণ্ডে। প্রাথমিক তদন্তে যা উঠে আসছে, তার ভিত্তিতে স্থানীয় বহুতলের নিরাপত্তরক্ষীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


বুধবার শোভাবাজার থেকে জোড়াবাগানে মামার বাড়ি ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয়ে যায় ৮ বছরের বালিকা। রাতভর খোঁজাখুঁজির পর মামার বাড়ির তিনটি বাড়ির পাশে একটি বহুতলের চারতলায় দেহ উদ্ধার হয় ছোট্ট নাবালিকার। ঘটনাকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা এলাকায়।

রামকুমার নামে এক ব্যক্তিকে শুক্রবার গ্রেপ্তার করে পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, লুকোচুরি খেলার সময় শিশুটি যখন ওই বাড়িতে যায় তখন ওই বহুতলের নিরাপত্তারক্ষী রামকুমার খাবারের লোভ দেখায় তাকে। পাড়ার কাকুর ডাক শুনে  চলে যাওয়ার পর ঘটে যায় নৃশংস ঘটনা। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি শিশুকে খাবার দেবার পর যৌন নির্যাতন করে। শিশু চিৎকার করায় ভয় পেয়ে যান। মারধর করার পর শ্বাসরোধ করে খুন করে অভিযুক্ত। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য ঘরে রাখা ছুরি দিয়ে গলায় আঘাত করে।

গোটা ঘটনার পর অভিযুক্ত প্রথমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু তার উপর যাতে সন্দেহ না হয় সেই কারণে সেই বাড়িতেই থেকে যায়। যখন গোটা এলাকায় বৃহস্পতিবার হুলুস্থুল পড়ে যায়, এলাকায় থাকলেও বহুতলের নিরাপত্তারক্ষীর কাজ ছাড়াও একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করার সুবাদে সে চলে যায় কাজে।

বিভিন্ন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে লুকোচুরি খেলার কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা। এরপর দারোয়ানের বক্তব্যে অসঙ্গতি মেলায় দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ভেঙে পড়েন অভিযুক্ত রামকুমার। পুলিশের দাবি, অপরাধের কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত।

শনিবার তাকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানাতে চলেছেন গোয়েন্দারা। অভিযুক্তের ফাঁসির সাজা চেয়ে আবেদন শিশুর বাবার। পাড়ায় বহু বছর ধরে থাকা বহুতলের ওই দারোয়ান যে এমন কাজ করতে পারেন বিশ্বাসী করতে পারছেন না কেউ। অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এলাকার বাসিন্দারাও।

অন্যদিকে এদিন জোড়াবাগান থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্যরাও। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।