কলকাতা: ৩ মাসের সময়সীমা শেষের আগে, ৮৯ দিনের মাথায় পোস্তা উড়ালপুলকাণ্ডে চার্জশিট পেশ করল কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল।
ঘটনার পর নির্মাণকারী সংস্থা আইভিআরসিএলের যে ৬ কর্তা এবং ৪ ইঞ্জিনিয়ারকে সিট গ্রেফতার করেছিল, তাঁদেরই নাম রয়েছে ২৬০০ পাতার এই চার্জশিটে।
ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পেশা করা এই চার্জশিটে কাউকে পলাতক দেখানো হয়নি। জেলবন্দি ১০ অভিযুক্তকে অনিচ্ছাকৃত খুন ও অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা-সহ চারটি ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
যদিও ঘটনার পর পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই খুনের মামলা রুজু করেছিল পুলিশ! এ প্রসঙ্গে লালবাজারের ব্যাখ্যা,  ঘটনার ভয়াবহতা দেখে প্রাথমিকভাবে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীসময়ে তদন্তে যে সব সাক্ষ্যপ্রমাণ উঠে আসে, তাতে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগই জোরাল হয়।
চার্জশিটে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ইন্ডিয়ান ব্যুরো অফ স্ট্যান্ডার্সসের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট গুণমানের সামগ্রী বিবেকানন্দ উড়ালপুল নির্মাণে ব্যবহৃত হয়নি।
উড়ালপুল-বিপর্যয়ের পরপরই সামনে এসেছিল তৃণমূল নেতা সঞ্জয় বক্সীর আত্মীয় রজত বক্সি-সহ একাধিক ব্যক্তির নাম। তাঁদের সংস্থার বিরুদ্ধে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের অভিযোগ উঠেছিল। যদিও চার্জশিটে নির্মাণকারী সংস্থা আইভিআরসিএলের ১০ জন ছাড়া আরও কারওরই নাম নেই।
এ প্রসঙ্গে লালবাজারের বক্তব্য, রাইটস-সহ একাধিক সংস্থার বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। ওই রিপোর্ট হাতে এলে বোঝা যাবে, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত কোন কোন সামগ্রী নিম্নচাপের ছিল। কোন কোন সংস্থা ওই খারাপ মাল সরবরাহ করেছিল, তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
সেক্ষেত্রে তখনই আদালতে সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিট পেশ করা হবে বলে দাবি লালবাজারের। নাম না থাকলেও, রজত বক্সি-সহ নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহকারী সংস্থার একাধিক কর্তার জবানবন্দি রেকর্ড করে তা চার্জশিটে নথিভূক্ত করা হয়েছে।
দিনটা ছিল ৩১ মার্চ। নির্মীয়মাণ অবস্থাতেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল পোস্তার বিবেকানন্দ উড়ালপুলের একটা বড় অংশ। বেঘোরে মারা গিয়েছিলেন ২৬ জন। আহত হন বহু মানুষ।
সেই ঘটনাতেই নির্মাণকারী সংস্থাকে কাঠগড়ায় তুলে চার্জশিট পেশ করল পুলিশ।