কলকাতা: ষষ্ঠ বেতন কমিশন কবে বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ করে সেই অপেক্ষায় বসে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। এর উপর আবার কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ-র ফারাকও বেড়েই চলেছে। কিন্তু, এরই মধ্যে রাজ্যের বিধায়করা দিব্য নিজেদের দৈনিক ভাতা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিলেন। প্রস্তাব কার্যকর হলে বিধায়কদের বেতন দাঁড়াবে ৮০ হাজার টাকার কাছাকাছি।


এ বছরের পয়লা এপ্রিল থেকেই রাজ্যের পূর্ণ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং বিধায়কদের বেতন বেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মাসিক বেতন ৮ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৭ হাজার এক টাকা। বিরোধী দলনেতার বেতন ১০ হাজার ২০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২ হাজার টাকা। পূর্ণমন্ত্রীদের বেতন সাড়ে সাত হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ২২ হাজার। প্রতিমন্ত্রীদের মাসিক বেতন ৭ হাজার ৩০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ২১ হাজার ৯০০। বিধানসভার স্পিকারের বেতন ১১ হাজার ৭০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৭ হাজার টাকা। ডেপুটি স্পিকারের বেতন ১০ হাজার ৬০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ২১ হাজার ৯০০। বিধায়কদের বেতন সাড়ে বারো হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে সাড়ে সতেরো হাজার টাকা।

বেতনের পাশাপাশি সেসময় পাশাপাশি মন্ত্রীদের দৈনিক ভাতাও বাড়ে। ১ হাজার থেকে বেড়ে মন্ত্রীদের দৈনিক ভাতা হয়েছে ২ হাজার টাক। অর্থাৎ মাসে ৬০ হাজার টাকা। ফলে বেতন ও ভাতা মিলিয়ে মাসে মন্ত্রীদের মোট প্রাপ্য দাঁড়ায় ৮২ হাজার টাকা। কিন্তু, এপ্রিল মাসে মন্ত্রীদের ভাতা বাড়লেও, বিধায়কদের দৈনিক ভাতা বাড়েনি। বিধানসভা সূত্রে দাবি, সম্প্রতি বিধানসভার এনটাইটেলমেন্ট কমিটির বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সুপারিশ করা হয়েছে, পূর্ণমন্ত্রীদের মতো বিধায়কদের দৈনিক ভাতাও ২ হাজার টাকা করা হোক। এই সুপারিশ অর্থ দফতরেও পাঠানো হয়েছে।

পদাধিকার বলে বিধানসভার এনটাইটেলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া কমিটিতে রয়েছেন সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী, কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীরা। অর্থাৎ বিধায়করা নিজেরাই দিব্যি নিজেদের বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ করেছেন!

এখন রাজ্যের বিধায়করা বেতন পান সাড়ে ১৭ হাজার টাকা। দৈনিক ভাতা ২,০০০ হলে, মাসের শেষে তাঁদের প্রাপ্য দাঁড়াবে সাড়ে ৭৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ পূর্ণমন্ত্রীদের বেতনের প্রায় কাছাকাছি।

বিধানসভা সূত্রে দাবি, এপ্রিল মাসে ভাতা না বাড়ানোয় ক্ষুব্ধ বাম বিধায়করা বর্ধিত বেতন নিতে অস্বীকার করেন। প্রথম মাসে তাঁরা বর্ধিত অঙ্ক মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে দান করারও উদ্যোগ নেন। যদিও, বিধানসভা সূত্রে খবর, এরপর থেকে বাম বিধায়কদের অ্যাকাউন্টে বর্ধিত বেতনই পড়ছে। তাঁরা কেউ টাকা ফেরত দেননি।