কলকাতা: দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলেই খুনের মামলা। আহত হলে অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারা। পথ দুর্ঘটনা বন্ধে কড়া আইনের ভাবনা রাজ্য সরকারের। রেজিস্ট্রেশন ও রোড ট্যাক্সের উপর বসবে ৫ শতাংশ করে সেস। যেখানে-যেখানে ফেলে রাখা যাবে না নির্মাণ-সামগ্রী, কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। ডিসেম্বরেই পেশ হবে বিল।


সচেতনতামূলক প্রচার চলছে তারপরও ঘটে চলেছে একের পর এক দুর্ঘটনা। পথ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এবার তাই কড়া আইন আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। এতদিন বেপরোয়া যানের ধাক্কায় কারও মৃত্যু হলে, অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারা দেওয়া হত। কিন্তু, প্রস্তাবিত নয়া আইনে, মৃত্যু হলে খুনের ধারা এবং জখম হলে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার ধারা প্রয়োগ করা হবে।

মঙ্গলবার নবান্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করেন, ডিসেম্বরেই ‘পাবলিক সেফটি অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট বিল’ আনা হবে। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে তৈরি হবে স্টেট রোড সেফটি অথরিটি। থাকবেন পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা।

পথ-নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করার প্রশ্নে আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে চলেছে নবান্ন। বাইপাস বা ছয় লেনের মতো রাস্তায়, যানভিত্তিক আলাদা লেন তৈরি করা হবে। ৫০টি আইটিআই-এ ড্রাইভিং শেখানো হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্সে দালালচক্র রুখতে নেওয়া হবে কড়া পদক্ষেপ। ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পরীক্ষা আগাগোড়া ভিডিওগ্রাফি করা হবে। পরপর ৩ বার কেউ ট্রাফিক আইন ভাঙলে, লাইসেন্স এবং গাড়ির রুট পারমিট, দুটোই বাতিল করা হবে। সিট বেল্ট না বাঁধা, হেলমেট না পরা ও মত্ত অবস্থায় গাড়ি বা বাইক চালানোর বিষয়ে আরও কড়া অবস্থান নিচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন।

পথ নিরাপত্তার খরচ তুলতে, রোড ট্যাক্স ও গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের ওপর ৫ শতাংশ সেস বসাচ্ছে রাজ্য সরকার। চালু হচ্ছে ‘রোড সেফটি সেস’।

রাস্তা দখল রুখতেও কড়া অবস্থান নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন জায়গায় পার্কিং লটের কারণে, রাস্তার অংশ কমে যাচ্ছে। বাড়ছে যানজট। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই সমস্যার মোকাবিলায় কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় পার্কোম্যাট তৈরি করা হবে। সিগন্যাল পোস্টগুলিতেও চলবে পথনিরাপত্তা নিয়ে সচেতনামূলক প্রচার।

কয়েক মাস আগে ‘সেফ ড্রাইভ-সেভ লাইফ’--এর স্লোগান দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার তারই সফল প্রয়োগ করতে চান তিনি। সেই লক্ষ্যেই নতুন আইনের ভাবনা।