কলকাতা: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোনয়নপর্ব ঘিরে ধুন্ধুমার। ফের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ। সংঘর্ষের ছবি তুলতে গেলে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে বাধা। আক্রান্ত এবিপি আনন্দ।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নের স্ক্রুটিনি ঘিরে বৃহস্পতিবার দিনভর উত্তাল হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি ক্যাম্পাসেরই মনোনয়ন জমা পড়েছে কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে। সেই মনোনয়নপত্রগুলির স্ক্রুটিনি ছিল বৃহস্পতিবার। এ দিনই প্রচুর বহিরাগতকে নিয়ে ক্যাম্পাসে হাজির হন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভানেত্রী। দাবি, ভোট যেন সুষ্ঠু ও অবাধে হয়। যদিও উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ জানান, এমন কিছু হয়নি যাতে বলা যায় ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হচ্ছে না।
ক্যাম্পাসে ঢুকতে গেলে রেজিস্টারে নাম লেখার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে সিসিটিভির নজরদারি। তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটের কোনও সম্পর্ক না থাকলেও বঙ্গবাসী-সহ একাধিক কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা কীভাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকলেন, এই প্রশ্ন উঠেছে। বঙ্গবাসীর এক ছাত্র জানান, ভোট আছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থনে এসেছি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ প্রতিটা সিট দখল করুক। সিনিয়ররা বলল, তাই এসেছি। উপাচার্যের ঘর থেকে বেরিয়ে জয়া দত্তর সদর্পে ঘোষণা, ৭৮৩-র মধ্যে চারশোয় জিতে গিয়েছি।
কিন্তু, ভোটের আগেই কী করে ভোটের ফল বলে দিচ্ছেন তিনি? উপাচার্য জানান, এদিন স্ক্রুটিনির ভেরিফিকেশন কাজ চলছিল। তার মধ্যেই কীভাবে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের নেত্রী জানলেন, তারা চারশো আসনে জিতে গিয়েছেন? এই প্রশ্নের মাঝেই ক্যাম্পাস ছাড়েন তিনি। আর তারপরই ক্যাম্পাস একেবারে রণক্ষেত্র। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী রীতিমতো হাতাহাতি শুরু করে দেয়।
সংবাদমাধ্যম এই ছবি তুলতে গেলে রে রে করে আসেন কয়েকজন। ছবি তুলতে বাধা দেওয়া হয়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের হাতে হেনস্থার শিকার হন এবিপি আনন্দ সাংবাদিক কৃষ্ণেন্দু অধিকারী। তাঁর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে হেনস্থা করা হয়। এত কিছুর পরেও, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভানেত্রীর দাবি, তাঁদের সংগঠনের কেউ কৃষ্ণেন্দুদাকে হেনস্থা করেনি। এটা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়, টিএমসিপির উপর বিরোধীদের আক্রমণ। শেষমেষ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি এ দিন এমন জায়গায় পৌঁছয়, যে পুলিশ মোতায়েন করতে হয়।